বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
আজ শুভ দীপাবলি

লাখো মানুষের মিলন মেলা বরিশালে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও বরিশাল

লাখো মানুষের মিলন মেলা বরিশালে

সহস্র প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মঙ্গল কামনায় দেশের সনাতন সম্প্রদায় আজ পালন করবে দীপাবলি উৎসব। পরে মধ্যরাতে মন্দিরে মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে কালীপূজা। দুর্গাপূজার বিজয়া পরবর্তী কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। অমাবস্যার রাতেই দীপাবলির আয়োজন করা হয়। দেবী কালী শ্যামা নামেও সমধিক পরিচিত। তাই এই পূজাকে  শ্যামা পূজাও বলা হয়। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার রায় বলেন, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে কালীপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে বরিশালে অনুষ্ঠিত হয়েছে ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় শ্মশান দীপাবলি উত্সব। এতে দেশ-বিদেশের লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জি কুডু জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস কালী পূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে পূজা অর্চনা করলে প্রয়াত ব্যক্তির আত্মা শান্তি লাভ করে। তাই আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি প্রয়াত প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে তার সমাধিস্থলে নিবেদন করা হয় প্রয়াতের পছন্দের নানা ধরনের খাবার। সবকিছু করা হয় তিথি থাকা অবস্থায়। এ ছাড়া সমাধির পাশে মোমবাতি প্রজ্বালন করে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন স্বজনরা।

 

তিনি আরও জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও দেশ-বিদেশের স্বজনহারা লক্ষাধিক মানুষ বরিশাল মহাশ্মশানে এসে প্রয়াত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় সমাগম হয়েছে। তিনি বলেন, মূলত প্রার্থনা অনুষ্ঠান হলেও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় বরিশাল মহাশ্মশান। এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উত্সব হলেও অন্য ধর্মের প্রচুর সংখ্যক মানুষ আসেন উত্সব উপভোগ করতে। উত্সব বর্ণিল করতে পুরো মহাশ্মশান এবং আশপাশের এলাকায় করা হয় মনোরম আলোকসজ্জা।

মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি সূত্র জানায়, ৫ একর ৯৬ শতাংশ মহাশ্মশানের পুরনো শ্মশানের বেশিরভাগ সমাধি ধ্বংস হয়ে গেলেও এখনো সেখানে ব্রাহ্মদের ২/৩টি এবং রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা সত্যানন্দ দাশ ও পিতামহ সর্বানন্দ দাশ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী দেবেন ঘোষ ও মনোরমা মাসি মা, শিক্ষাবিদ কালী চন্দ্র ঘোষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির সমাধি রয়েছে। নতুন-পুরনো মিলিয়ে মহাশ্মশানে ৬১ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি পাকা, ১০ হাজার কাঁচা মঠ এবং ৮০০ মঠ রয়েছে যাদের স্বজন এই দেশে নেই। সেসব মঠ হলুদ রং করা হয়েছে। স্বজন না থাকা মঠগুলোতে কমিটির পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয় বলে জানিয়েছেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

১৯২৭ সাল থেকে ওই স্থানে শ্মশান দীপাবলি উত্সব পালিত হয়ে আসছে। উপমহাদেশের মধ্যে এ মহাশ্মশানকে ঘিরে সবচেয়ে বড় শ্মশান দীপাবলি উত্সব হয় বলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দাবি।

 

সর্বশেষ খবর