বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নতুন ইভিএম যাত্রা রংপুরে

গোলাম রাব্বানী


নতুন ইভিএম যাত্রা রংপুরে

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যবহারের মধ্য দিয়ে নতুন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) যাত্রা শুরু হচ্ছে। এই সিটির ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪১ নম্বর ভোটকেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ কেন্দ্রের ভোটার হচ্ছে দুই হাজার ৫৯ জন। নিউ শালবন ও শালবন এলাকার ভোটাররা ছয় কক্ষে ভোট প্রদান করবেন। এই নতুন মেশিনে ভোটদানে ভোটারদের উৎসাহ দিতে আজ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মক ভোটিংয়ের ব্যবস্থা করছে ইসি। এ এলাকার ভোটাররা এই কয়েক দিন পরীক্ষামূলক ভোট দিতে পারবেন। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রংপুর সিটিতে নতুন ইভিএমে (১৪১ নম্বর কেন্দ্রে) ভোট গ্রহণ হবে। এ জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে নতুন ইভিএমের মাধ্যমে ভোট প্রদান ও ভোটারদের সচেতন করতে ভিডিওচিত্র তৈরি করা হবে। জানা গেছে, ২০১৬ সালে ইসি নিজ উদ্যোগে ইভিএম বানানোয় হাত দেয়। রংপুর সিটিতে ইসির তৈরি যন্ত্রটির প্রথম পরীক্ষামূলক ব্যবহার হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে ফিঙ্গার প্রিন্টের অপশন নাও থাকতে পারে। মক ভোটিংয়ের বিষয়ে এই সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘একটি কেন্দ্রে আজ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মক ভোটিং চলবে। আমরা এ জন্য এলাকায় প্রচারণাও চালাচ্ছি। মক ভোটিংয়ের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে মেশিনের পরিচিতি ঘটবে। এদিকে আসছে জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনার মধ্যে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সীমিত আকারে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম চালু হচ্ছে। দলীয় প্রতীকে ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটির ভোটে অংশ নিচ্ছে সংসদের বাইরে থাকা বিএনপিও। তবে বরাবরের মতো ইভিএমের বিরোধিতা রয়েছে দলটির। স্থানীয় নির্বাচনে ২০১০ সালে সীমিত পরিসরে ব্যবহার শুরু হলেও বুয়েটের তৈরি ওই সব ইভিএমের কারিগরি ত্রুটি এবং রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে ২০১২ সালের পর আর কোনো নির্বাচনে তা ব্যবহৃত হয়নি। নির্বাচন কমিশন বলছে, এবার সীমিত পরিসরে মাত্র একটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে নতুন ইভিএম ব্যবহার হবে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসির কর্মকর্তারা।

এ বছর নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটির ভোট করলেও তাতে ইভিএম ব্যবহার করতে পারেনি। সর্বশেষ ২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশন রংপুরে ছোট পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। পাঁচ বছর পর আগে ‘ইভিএম অধ্যায়ের ইতি’ ঘটলেও কে এম নূরুল হুদার নতুন কমিশন স্থানীয়ভাবে ফের ইভিএম চালু করল। এর আগে বুয়েটের তৈরি ইভিএম প্রথম ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের একটি ওয়ার্ডে ব্যবহার করা হয়। পরে নায়ায়ণগঞ্জের কয়েকটি ওয়ার্ডে, নরসিংদী পৌরসভা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের পুরো নির্বাচন ইভিএমে করা হয়।

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন রাজশাহীতে ও ২০১২ সালে রংপুরে ছোট পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করে। বুয়েটের বানানো ওই ইভিএম কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে বুয়েট ও ইসির মধ্যে দ্বন্দ্বও দেখা যায়। ওই দ্বন্দ্বের পর ২০১৬ সালে ইসি নিজ উদ্যোগে ইভিএম বানানোয় হাত দেয়। এতে জাল ভোট ঠেকাতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির সহায়তা নেওয়া হবে। নতুন এ পদ্ধতিতে আঙ্গুলের ছাপ ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে ভোটার পরিচিতি নিশ্চিত করা হবে। ১১ মে সিইসি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসির সামনে তা উপস্থাপনও করা হয়। রংপুর সিটিতে প্রথম যন্ত্রটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে ফিঙ্গার প্রিন্টের অপশন নাও থাকতে পারে।

সর্বশেষ খবর