বুধবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাবির হলে সিট দখলে ছাত্রলীগ

মর্তুজা নুর, রাবি

রাবির হলে সিট দখলে ছাত্রলীগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলের সিটের নিয়ন্ত্রণ এখন ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে। একটি সিট পাওয়ার জন্য ছাত্রলীগ নেতাদের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। কর্তৃপক্ষ বরাদ্দের জন্য নোটিস দিলেও নেতাদের সুপারিশ ছাড়া সিট পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। এই সুযোগে অনেক নেতাই গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে সিট বাণিজ্য। এসব বিষয়ে প্রশাসন অবগত থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার। তিনি বলেন, প্রমাণ মিললে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, কোনো একটি সিট ফাঁকা হওয়ার আগেই তা দখলে নিচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতারা। প্রত্যেক হলের মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের তালিকা করে রাখেন তারা। এখানে প্রশাসন থেকে বরাদ্দ পেয়েও উঠতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। তবে অধিকাংশ প্রাধ্যক্ষ যেন নীরব দর্শক। কারণ বরাদ্দ দেওয়া তার এখতিয়ারে থাকলেও ভরসা করতে হচ্ছে ছাত্রলীগ নেতাদের উপর।

সূত্রগুলো বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি ছাত্র হলের মধ্যে ৮টিতেই চলছে ছাত্রলীগ নেতাদের দখল মহড়া। এর মধ্যে আমীর আলী হলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাবি ছাত্রলীগ কমিটির কৃষিশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাকিল হোসেন, মতিহারে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন, কর্মী সাব্বির আহমেদ, শেরেবাংলায় সহসভাপতি শাকিল হোসেন, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক এসএম জীবন, জোহায় সহসভাপতি গুফরান গাজী, ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদ ওমর চিশতী, জিয়ায় সহসভাপতি সুপ্ত সাহা, আইন বিষয়ক উপ সম্পাদক আহসান উল্লাহ, হবিবুর রহমানে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাকিম পাভেল, কর্মী মহিদুল ইসলাম শান্ত, লতিফ হলে সহসভাপতি তৌহিদ মোরশেদ, সহসম্পাদক আল শাহরিয়ার সজল, সোহরাওয়ার্দীতে সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান শাকিল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক রবিউল সরকার রুবেল। অন্যদিকে  রাজনীতি না করলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে সিট পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে মাদার বখসে সাংগঠনিক সম্পাদক চঞ্চল কুমার অর্ক ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব এবং শাহ মখদুমে আরিফ বিন জহির দায়িত্বে থাকলেও এখানে বরাদ্দের মাধ্যমেই উঠছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রলীগ করতে হবে এমন শর্তেই নেতারা প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে তুলছেন। আর যাদেরকেই তুলছেন তারা ছাড়া অন্য কেউ আবাসিকতা পাচ্ছেন না। সম্প্রতি ওঠা ৩০ শিক্ষার্থীর ২০ শিক্ষার্থীই আবাসিকতা পেয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সুজন ও শাকিল, মুস্তাকিমের রেফারেন্সে। নবাব আব্দুল লতিফ হলে গত বছরে দুবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে গত এক বছরে কোনো বরাদ্দ দিতে পারেনি প্রশাসন। বরাদ্দের জন্য মৌখিক পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়নি এক বছরে। আবেদন করা শিক্ষার্থীরা ছাড়া অন্য শিক্ষার্থীরা হলে উঠে যাচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতাদের মাধ্যমে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর