রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঢাকাসহ চার বিভাগের বাতাস অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর

তালিকায় নারায়ণগঞ্জ গাজীপুরও

জিন্নাতুন নূর

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের আরও তিনটি বিভাগে (চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা) বায়ুদূষণের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর দেশের বায়ুদূষণ মাত্রার মানদণ্ডে এই মাত্রাকে বলা হয় ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’। এমনকি এই চার বিভাগ ছাড়াও ঢাকার পাশে দুই শিল্প এলাকা গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের বায়ুও বর্তমানে ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রায় গিয়ে ঠেকেছে। এর একটি এলাকায় পরিবেশ অধিদফতরের দূষণের জন্য নির্ধারিত সহনশীল মাত্রার চেয়েও পাঁচ গুণ বেশি ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়। আর এ অবস্থায় ঢাকাসহ চার বিভাগের বাসিন্দাদের তীব্র স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

পরিবেশ অধিদফতরের নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ প্রকল্পের দৈনিক বায়ুর মান নিয়ন্ত্রণ ইনডেক্সের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ঢাকায় জানুয়ারির ১ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দিন ছাড়া বাকি ১৭ দিনই বায়ুদূষণের মাত্রা সর্বোচ্চ তথা ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ ছিল। এর পরই বায়ুর মান ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ ছিল খুলনায় (১৬ দিন)। তার পর অবস্থান রাজশাহীর সেখানে আট দিন এবং চট্টগ্রামে চার দিন বায়ুদূষণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল। এ ছাড়া শিল্প এলাকা গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে এই ২২ দিনই বায়ুর মান ছিল অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে ১১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে বায়ুদূষণের মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ছিল ৫৭৬ মাইক্রোগ্রাম; যা সর্বোচ্চ মাত্রাও অতিক্রম করে। সাধারণত বায়ুদূষণের মাত্রা নির্ধারণে দেশের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এতে ০-৫০ পয়েন্ট হচ্ছে ‘ভালো’, ৫১-১০০ পয়েন্ট মাঝারি, ১০১-১৫০ পয়েন্ট সতর্কতামূলক, ১৫১-২০০ পয়েন্ট অস্বাস্থ্যকর, ২০১-৩০০ পয়েন্ট খুব অস্বাস্থ্যকর আর ৩০১-৫০০ পয়েন্ট অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। পরিবেশ অধিদফতর ঢাকার শেরেবাংলানগর, ফার্মগেট ও দারুসসালাম এলাকায় তিনটি এয়ার মনিটরিং স্টেশনের মাধ্যমে ঢাকার বাতাসে ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি পর্যালোচনা করে। আর এ পর্যালোচনায় জানুয়ারির ২২ তারিখ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের বাতাসে কার্বন মনোঅক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড, ওজোন, সালফার, সালফার ডাইঅক্সাইড, পিএম১০ ও পিএম২.৫-এর মতো দূষণকারী পদার্থের আশঙ্কাজনক উপস্থিতি মিলেছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এলাকার মধ্যে শেরেবাংলানগর, ফার্মগেট, দারুসসালাম রোডে বায়ুদূষণকারী ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। পরিবেশবিদরা জানান, শুষ্ক মৌসুমে বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি হয়। এর মধ্যে পিএম১০ ও পিএম২.৫-এর উপস্থিতি উদ্বেগজনক। মূলত ইটভাটা, গাড়ির ধোঁয়া ও পথের ধুলাবালি বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। গত বছরের ডিসেম্বরেও বেশ কয়েক দিন ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের বায়ুদূষণ মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে তা ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ হয়ে ওঠে; যা জানুয়ারিতে বৃদ্ধি পেয়ে উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর