শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

দেশি-বিদেশি ক্রেতায় সরগরম বসুন্ধরার ফার্মা এক্সপো

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশি-বিদেশি ক্রেতায় সরগরম রাজধানীর কুড়িলের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এশিয়া ফার্মা এক্সপো ২০১৮। মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি করতে এক্সপোর প্রথম দিনেই কয়েক হাজার উদ্যোক্তা ও দর্শনার্থী আসেন। ঘুরে ঘুরে দেখেন প্রদর্শনী। বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম সম্পর্কে খোঁজ নেন। এসব সরঞ্জামের সুবিধা সম্পর্কে বক্তব্য স্টল কর্মীরা তুলে ধরেন। প্রদর্শনীতে দেশি উদ্যোক্তারা ওষুধশিল্পসংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল সম্পর্কে জানছেন।

গতকাল মেলায় সরেজমিন দেখা গেছে, দেশের সম্ভাবনাময় খাত ওষুধশিল্পের আধুনিক প্রযুক্তির এ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামিদামি সাড়ে ছয় শ কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানগুলো ওষুধ উৎপাদনের প্রযুক্তির বিশাল সমাহার নিয়ে স্টল সাজিয়েছে। দেশের চিকিৎসাসেবার বিভিন্ন সরঞ্জাম স্থান পেয়েছে স্টলগুলোয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করছে। ওষুধের গুণগতমান তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করার এ প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখছেন দর্শনার্থীরা। আফ্রিকা মহাদেশের নাইজেরিয়া, বুরুন্ডি, উগান্ডা, ঘানা, কেনিয়ার আমদানিকারকরা এসেছেন এ দেশের ওষুধ তৈরির প্রযুক্তি দেখতে।

এবারের এক্সপোয় আমেরিকা, জাপান, চীন, ভারতসহ ৩৫টি দেশের সাড়ে ছয় শ কোম্পানি অংশ নিয়েছে। আয়োজনে রয়েছে ফার্মা প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, বায়োটেক ল্যাব ইকুইপমেন্ট, এপিআই ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টস ও মেশিনারিজ, ফার্মা ফর্মুলেশন্স ও কন্ট্রাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং। এতে দেশি উদ্যোক্তারা ওষুধশিল্পসংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল সম্পর্কে জানতে পারেন। প্রদর্শনীতে ট্যাবলেট তৈরির মেশিনের সামনে দাঁড়িয়ে দেখছেন একটি মেশিনের মধ্যেই বিভিন্ন কেমিক্যাল দেওয়া হচ্ছে। মেশিনের মধ্যে গিয়ে ট্যাবলেট হয়ে বের হচ্ছে। স্টল কর্মীরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন কীভাবে কেমিক্যাল ঢালতে হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেমিক্যালের সঠিক মাপ ঠিক রেখেই মেশিন নির্দেশনা দিচ্ছে। তৈরি হওয়া ট্যাবলেট আরেকটি মেশিনে ঢুকে প্যাকিং হয়ে বের হচ্ছে। প্যাকিংসহ ওষুধ গিয়ে ঢুকছে আরেকটি মেশিনে সেখানে ওষুধের নাম, সিল, লোগো ছাপা হয়ে বের হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে লাগছে মাত্র আধা ঘণ্টা। স্টল কর্মী জানান, এ প্রযুক্তি বাংলাদেশে এই প্রথম এসেছে। বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাতে লাগে তিন থেকে চার ঘণ্টা। একই সঙ্গে ট্যাবলেট তৈরি থেকে প্যাকিং পর্যন্ত পৃথক মেশিন ও অপারেটরের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমাদের এই মেশিনে মাত্র একজন অপারেটরই যথেষ্ট। এই মেশিনে সব ধরনের কেমিক্যাল আলাদা পাত্রে রাখতে হয়; যা মেশিনই সঠিক মাপ নিয়ে ট্যাবলেট তৈরি করে।

এমন মেশিন শুধু ট্যাবলেট নয়, বিভিন্ন ধরনের সিরাপ তৈরির মেশিনও রয়েছে। এসব মেশিনে ভিন্ন ভিন্ন পাত্রের মধ্যে কেমিক্যাল দিলেও মেশিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ে সিরাপ তৈরি করছে। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলবে। মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত।

সর্বশেষ খবর