সোমবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

খুনিদের গ্রেফতারে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চায় পরিবার

তনু হত্যার ২৫ মাস

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার পর ২৫ মাস চলে গেছে। কিন্তু এখনো খুনিরা শনাক্ত হয়নি। নেই মামলার কোনো অগ্রগতিও। ফলে ক্ষুব্ধ মা-সহ পরিবারের সদস্যরা ঘাতকদের গ্রেফতারে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাইছেন।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘মেয়ের শোকে তনুর বাবা অসুস্থ, হাঁটতে পারছেন না। তিনি বর্তমানে তিন মাসের ছুটিতে আছেন।’ তিনি বলেন, ‘মেয়ে থাকলে আমাদের দেখাশোনা করতে পারত। এখন কে দেখবে আমাদের?’ তিনি বলেন, ‘মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের আবেদন জানাতে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই।’

পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভিতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেনি তনু। পরে তার স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভিতর একটি জঙ্গলে মরদেহ পায়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর  ২০১৬ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। গত বছরের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা— এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না। সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা আসামি বলে সিআইডি জানায়। তবে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। সুজন কুমিল্লার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মায়মুনা আক্তার রুবী বলেন, ‘তনুর মতো একটি প্রাণোচ্ছল মেয়েকে হত্যা করা হলো। ২৫ মাসেও কোনো আসামি শনাক্ত করা হয়নি। আমরা কোন সমাজে বসবাস করছি?’ গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, ‘একটি সুরক্ষিত স্থানে তনু হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

২৫ মাসেও অপরাধীদের শনাক্তে সিআইডির ব্যর্থতায় প্রমাণ হয়— সাধারণ মানুষ কত অসহায়!’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মামলার স্বার্থে পুনরায় অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনেক কর্মকর্তা মিশনে ছিলেন, তারা আসছেন। দু-তিন মাসের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর