বুধবার, ২০ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঈদে ৩০ হাজার কোটি টাকার কেনাবেচা

আলী রিয়াজ

নতুন জামা, পোশাক, গহনা, খাদ্যদ্রব্যসহ ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটায় সারা দেশের মানুষ খরচ করেছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা। সারা দেশে প্রায় ২১ লাখ দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এ বছর ঈদুল ফিতরে বিক্রি বেড়েছে আগের বছরের তুলনায় ৩ থেকে ৪ শতাংশ বেশি। দেশের  ভিতরে শপিং মল, দোকানগুলোতে বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ২৬ হাজার কোটি টাকা। দেশের বাইরে ঈদের কেনাকাটা করতে গিয়ে খরচ করেছেন ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা। দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির করা সার্ভেতে এই তথ্য পাওয়া গেছে। 

জানা গেছে, বাংলাদেশের নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা করে থাকেন ঈদুল ফিতরের সময়। এরপরে ঈদুল আজহা, পয়লা বৈশাখ ও শারদীয় দুর্গোৎসবের সময়ে। রাজধানীতে শতাধিক অভিজাত শপিং মার্কেটেই মূলত বেশি কেনাবেচা হয়ে থাকে। রমজানের শুরু থেকে সারা দেশ থেকেই কেনাকাটা করতে আসেন রাজধানীতে। রাজধানীর বৃহৎ অভিজাত শপিং মার্কেট বসুন্ধরা সিটি সুপার শপিং মলে এ বছর বিক্রি হয়েছে ২ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা। ক্লিপ, চুড়ি থেকে শুরু করে স্যুট, জামা, পোশাক, গহনা বিক্রির দোকানগুলোতে রমজানের শুরু থেকেই ছিল উপচে পড়া ভিড়। রাজধানীতে সব সুবিধাসম্পন্ন এই মার্কেটের তাই বিক্রির পরিমাণ ছিল বেশি। এরপরে রয়েছে বিশ্বরোড সংলগ্ন যমুনা ফিউচার পার্ক, উত্তরার রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স, মাস্কাট প্লাজা, পলওয়েল মার্কেট, মিরপুরে মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, নিউমার্কেট, শাহআলী মার্কেট, বাড্ডায় সুবাস্তু, মালিবাগে মৌচাক মার্কেট, নয়াপল্টনে পলওয়েল মার্কেট, সিটি হার্টস, নীলক্ষেত এলাকায় নিউমার্কেট, চাঁদনিচক, গুলিস্তানে পীর ইয়ামেনি, যাত্রাবাড়ীর ইদ্রিস সুপার মার্কেট, জুরাইনে আলম মার্কেট, বিক্রমপুর প্লাজায় সবচেয়ে বেশি কেনাবেচা হয়েছে। এসব মার্কেটে রমজানের শুরু থেকেই বিক্রির পরিমাণ প্রতিদিন বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো কোনো মার্কেটে শত কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কয়েক বছর ধরেই বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের ঈদকেন্দ্রক কেনাকাটার পরিমাণ। এর বাইরে ঈদকেন্দ্রিক সেমাই, মাংস, মসলাসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের বিক্রিও গত বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। দেশের বাজার থেকে যেমন কেনাকাটা বেড়েছে, ধনীদের একটি অংশ দেশের বাইরে কেনাকাটাও করতে গেছেন। দোকান মালিক সমিতির সার্ভেতে দেখা গেছে, গত বছর ঈদের বিক্রি হয়েছিল ২৩ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। তার আগের বছর ঈদে বিক্রি হয়েছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের আশা ছিল এ বছর ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিক্রি হবে। দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে তাতে ১৫ শতাংশ হারে ঈদের মার্কেটে বিক্রি হওয়ার কথা। প্রতি বছর হচ্ছেও তাই। কিন্তু বড় একটি অংশ দেশের বাইরে বিশেষ করে ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডে ঈদের কেনাকাটা করতে যান। রাজধানীর নাগরিকরা এই তালিকায় শীর্ষে। সরকার থেকে যদি এমন একটি প্রচার করা হয় যে, ঈদে আমাদের দেশীয় পণ্য ব্যবহার করব তাহলে এই টাকা দেশে রাখা সম্ভব। ১৯৯১ সালে আমাদের প্রচেষ্টার কারণে বিদেশি সুতি শাড়ি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তার প্রতিফলন আজ আমরা পাচ্ছি। এখন সুতি শাড়ির সবটাই আমাদের দেশীয়। কিন্তু সিনথেটিক পণ্যের ক্ষেত্রে আমরা পারছি না। এ জন্য বিশেষ কোনো উদ্যোগ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর