রবিবার, ১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

এসি রবিউল দেখেছিলেন আলোকিত পৃথিবীর স্বপ্ন

জাবি প্রতিনিধি

২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা ঠেকাতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল করিম কামরুলের স্বপ্ন ছিল আলোকিত পৃথিবীর। তার সেই স্বপ্নকে অবলম্বন করেই পথ চলছেন পরিবারের সদস্যরা। বাবার মৃত্যুর পর থেকেই বড় বেশি চুপচাপ আর গম্ভীর রবিউলের আট বছর বয়সী সন্তান সাজিদুল করিম সামি। তার অনুযোগ, পৃথিবীতে যে বাবা ছিল তার কেন্দ্রবিন্দু, সে জগৎ সহসা হারিয়ে যাওয়ায় সেও অসহায় হয়ে পড়েছে।

দুই সন্তানের জনক রবিউল করিম দেখে যেতে পারেননি তার দ্বিতীয় সন্তান কামরুন্নাহার রায়নার মুখও। গুলশান ট্র্যাজেডির এক মাস পর জন্ম হয় রায়নার। বাবার স্পর্শ না পেলেও পিতৃস্নেহ বঞ্চিত অবুঝ রায়নার পৃথিবীতে পুলিশের পোশাক পরা বাবার ছবিটিই সবকিছু। তার কাছে এই ছবিটিই তার ‘আব্বু’। কোনো কারণে কান্না শুরু হলে কিছুতেই যখন তাকে থামানো যায় না। তখন একমাত্র বাবার ছবিই পারে রায়নার কান্না থামাতে।

রবিউল করিমের সহধর্মিণী উম্মে সালমা জানান, অসহায় সুবিধাবঞ্চিত আর প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি ছিল তার গভীর মমত্ববোধ। এই মমত্ববোধ থেকেই নিজ গ্রাম মানিকগঞ্জের কাটিগ্রামে সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য স্কুল ‘ব্লমস’ (বিকনিং লাইট অরগানাইজেশন অব ম্যানকাইন্ড অ্যান্ড সোসাইটি) গড়ে তুলেছিলেন আলোকিত পৃথিবীর স্বপ্ন দেখা রবিউল করিম। বর্তমানে এই স্কুলে পড়াশোনা করছে ৪০ জন শিক্ষার্থী। স্কুলের সার্বিক দিক দেখাশোনা করছেন রবিউল করিমের ছোট ভাই শামসুজ্জামান শামস। তিনি জানান, আর্থিক সংকট থাকলেও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি কোনোরকমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। তবে সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সংস্থার সহযোগিতা পেলে রবিউল করিমের অপূর্ণ স্বপ্নকে আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। এ ছাড়া নজরুল বিদ্যাসিঁড়ি নামে একটি স্কুলও গড়ে তুলেছিলেন রবিউল করিম। এটি এখন পরিচালনা করছে তারই এক বন্ধু মিজানুর রহমান।

সর্বশেষ খবর