শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিটি নির্বাচন

দুই প্রার্থীর দুই চাওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার শুরুতেই আন্দোলিত হয়ে উঠেছে রাজশাহী। দুই দলের হেভিওয়েট প্রার্থী লিটন ও বুলবুলের মহারণ দেখতে যেন মুখিয়ে রয়েছেন পদ্মাপাড়ের মানুষ। কী করেছেন, আর নির্বাচিত হলে কী করতে চান; নিজেকে স্বপ্নশ্রমিক দাবি করে প্রচারণায় নেমে সেসব কথারই বিস্তারিত তুলে ধরছেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। আর নানা সমস্যায় থাকা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলছেন কারান্তরীণ খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা। রাসিক নিবার্চনকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবেই দেখছেন বুলবুল ও তার দলের নেতা-কর্মীরা। ফলে উন্নয়নের পথে থাকবেন, না খালেদার মুক্তির আন্দোলনে শরিক হবেন তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন সাধারণ ভোটাররা। অন্যদিকে প্রতীক পাওয়ার পর গত মঙ্গলবার ১৪ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন নৌকার মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। ১১ পাতার নির্বাচনী ইশতেহারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কর্মসংস্থানের। এ ছাড়া নতুন প্রকল্পসহ ১৪ দফা উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন লিটন। এরই মধ্যে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাসহ ১৪ দলের শরিক দলগুলো সভা করেছে। ওই সভায় নৌকার প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের জয় সুনিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য জোটের সমন্বয়ক হিসেবে ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্য সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন বাদশা। প্রার্থী প্রত্যাহার করে জাতীয় পার্টিও লিটনকে সমর্থন দিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছে। তবে লিটন ইস্যুতে রাজশাহীতে ১৪ দলীয় নেতারা একাট্টা হলেও প্রতিপক্ষ শিবিরে তা এখনো অদৃশ্য। বুলবুলের পক্ষে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম দল জামায়াতে ইসলামী শেষ পর্যন্ত তাদের প্রার্থী দেয়নি ঠিকই। কিন্তু সমর্থনও জানায়নি।

 নির্বাচনী প্রচারণায় এখন পর্যন্ত বুলবুলের পক্ষে মাঠে নামেনি জামায়াত। তবে এক সময়ের সুসংগঠিত জামায়াতের রাজনৈতিক অবস্থা এখন অনেকটাই ভঙ্গুর। মহানগর সেক্রেটারিসহ নেতা-কর্মীদের বেশির ভাগ সদস্যই নাশকতার মামলায় এখন কারাবন্দী। যারা বাইরে আছেন, তারাও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কাজেই দলটির সমর্থন নিয়ে বিএনপির কতটা লাভ হবে, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, তার সময় ছিল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের স্বর্ণযুগ। ওই সময় রাজশাহীর যা উন্নয়ন হয়েছে তা আর কারও আমলে হয়নি। নির্বাচিত হলে রাজশাহী হবে ‘মেগা সিটি’ বলেন লিটন। অপরদিকে সদ্য বিদায়ী মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, গত পাঁচ বছরে রাজশাহী সিটির মেয়র থাকার সময়ে তিনি মাত্র ২৬ মাস কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে ১২টি মামলা দেওয়া হয়েছে। যেগুলোর ৮টি চলমান, চারটি স্থগিত অবস্থায় রয়েছে। হাজতেও থাকতে হয়েছে প্রায় সাত মাস। দুবার সাময়িক বরখাস্ত হয়েছি। রাজশাহীর মানুষ এসবের সাক্ষী। বুলবুল বলেন, বর্তমানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। এখানে লেভেল পেয়িং ফিল্ড তৈরি করা না গেলে প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া যাবে না। এরপরও তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। কারণ দলীয়ভাবে এ নির্বাচনকে তারা কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবেই নিয়েছেন।

জামায়াতের সমর্থন বিষয়ে জানতে চাইলে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, তাদের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি বলে শুনেছি। সিদ্ধান্ত পেলে শরিক দল জামায়াতও মাঠে নামবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর