শিরোনাম
শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

সরকার আইনকানুন উপেক্ষা করছে

বিএনপির সেমিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানবাধিকার লঙ্ঘন বাংলাদেশে এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় টিকে থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার। এ জন্য একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা এই বিষয়গুলো অনেকবার বলেছি, কিন্তু সরকারের কর্ণগোচর হয়নি। বরং তারা সংবিধান, আইনকানুন উপেক্ষা করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করছে চাইছে। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানোই হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন। অথচ তিনি তাঁর জীবনের বড় অংশ গণতন্ত্রের জন্য উৎসর্গ করছেন। গুম, হত্যা, সন্ত্রাস, জেল-জুলুমসহ অকথ্য নির্যাতন চালাচ্ছে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর। ‘রাইট টু লাইফ এ ফার ক্রাই ইন বাংলাদেশ’ ২০০৯-জুন- ২০১৭’ শীর্ষক মানবাধিকার বিষয়ক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। গতকাল বিকালে রাজধানীর গুলশানে লেক শোর হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টারাসহ কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, কানাডা, ফ্রান্স, ইরান, জার্মান, ফিলিস্তিন, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান, বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এলিনা খান, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, দলের ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল মান্নান, বেগম সেলিমা রহমান,  মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, শওকত মাহমুদ, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সহসম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী সিরাজুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মির্জা ফখরুল বলেন, সাতবার বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হলেও সরকার কর্ণপাত করেনি। সর্বশেষ ১১ দিন ধরে তাঁর সঙ্গে কারাগারে কাউকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ তিনি কারাগারে মারাত্মকভাবে অসুস্থ। বিদেশিদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দলের তথ্য মতে এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী হারিয়ে গেছে। তাদের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ১০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। সারা দেশে ৭৮ হাজার মামলায় ১৮ লাখ নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করে আসামি করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপিকে ছাড়া দেশে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। শুধু তাই নয়, বিগত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কী হয়েছে, তা আপনারা সবাই অবগত রয়েছেন। এ অবস্থার মধ্যেও মানুষ তাদের অধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বর্তমান সরকারের শাসনামলে সংঘটিত গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার তালিকা ও সংখ্যার আলোকে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, তথ্যচিত্র প্রদর্শনের পর বলার কিছু থাকে না। প্রতিদিন আমরা পত্রপত্রিকায় দেখছি দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে লাশ পড়ে থাকে। নারীরা তাদের সম্ভ্রম হারাচ্ছে, শিশুরা নির্যাতিত হচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর কত কী নির্যাতন করা হচ্ছে। ভিন্নমত পোষণকারীসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শরীরে পর্যন্ত হাতুড়িপেটা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর