বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিটি নির্বাচন

তরুণ ভোটাররাই গড়ে দেবে পার্থক্য

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

তরুণ ভোটাররাই গড়ে দেবে পার্থক্য

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হতে হলে তরুণ ভোটারদের মন জয় করতে হবে। তিন লাখের বেশি ভোটারের মধ্যে ৩০ ভাগই তরুণ ভোটার। এর মধ্যে আবার এবারই প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ৩১ হাজার তরুণ। তাই প্রার্থীদের পরিকল্পনায় রাখা হচ্ছে তরুণদের জন্য কর্মসূচি। রাজশাহী মহানগরীতে মোট ভোটার তিন লাখ ১৮ হাজার ৯৩২ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার ৩১ হাজার ২২৩ জন। এ কারণে এবার প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিতেও অগ্রাধিকার পেয়েছে তরুণদের ভাবনা। রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হলে লাখো বেকারের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। একই প্রতিশ্রুতি আছে বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের। এ ছাড়া তারা নতুন উদ্যোক্তা তৈরির দিকে নজর দেবেন বলেও আশ্বাস দিচ্ছেন। রাজশাহী কলেজের ইংরেজি দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র ফাওজুল করিম জনি এবার প্রথম ভোট দেবেন। প্রার্থীর কোন যোগ্যতাকে বিবেচনায় নিয়ে তাকে ভোট দেবেন— এমন প্রশ্নের জবাবে জনি জানান, সারা দুনিয়ায় এখন তরুণদের জয়জয়কার। তরুণরাই ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসছে। বদলে দিচ্ছে দেশ ও সমাজের চেহারা। কিন্তু রাজশাহীতে এখনো তরুণদের জন্য কাঙ্ক্ষিত জায়গা তৈরি হয়নি। তার কাছে যে প্রার্থীকে মনে হবে যে, তিনি তরুণদের জন্য কাজ করতে পারবেন, তাকেই ভোট দেবেন। নগরীর সপুরা এলাকার বাসিন্দা ফারজানা নওশীন নিশি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা করেন। প্রথম ভোটার হয়েছেন। নিশি বলেন, ‘রাজশাহীতে এখনো কোনো তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক কেবল নির্মাণ হচ্ছে। আমি চাই না, এটার নির্মাণ কাজ থেমে যাক অথবা খুবই ধীরগতিতে চলুক। কারণ, আমরা এখানে চাকরি চাই।’ নগরীর কাজলা এলাকার বাসিন্দা আবু জাফরের ভাবনাটা আরও গভীর। জাফর গত বছর মাস্টার্স শেষ করে এখনো চাকরি পাননি। তিনি বলেন, রাজশাহী শিক্ষানগরী। কিন্তু এখানে চাকরির জায়গা কম। হাসপাতাল আর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া এখানে তেমন চাকরি ক্ষেত্রই সৃষ্টি হয়নি। সিটি করপোরেশনের সদ্য বিদায়ী মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেননি। তাই আগামীতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবেন, এমন প্রার্থীকে ভোট দিতে চান। মেয়র নির্বাচিত হলে তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের প্রত্যাশা কীভাবে পূরণ করবেন জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের জন্য রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু আইটি পার্ক হচ্ছে বলে আমরা ইশতেহারে বলেছি। তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির জন্য শিল্প সহজীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। শিল্পে গ্যাস দেওয়ার কথা আমরা বলেছি এবং সেটিও হবে। এ ছাড়া তরুণদের বিনোদনের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ, কমিউনিটি হলসহ বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। তাছাড়া তরুণদের জন্য বড় সমস্যা হলো মাদক। আমি নির্বাচিত হলে মাদকের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিরোধ ও পুনর্বাসন কর্মসূচি হাতে নেব।’ বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এখনো তার নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেননি। তাই তরুণদের নিয়ে তার পরিকল্পনার সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে এ নিয়ে জানতে চাইলে বুলবুল বলেন, ‘নগরীতে বিনোদন কেন্দ্রের অভাব। আমি আবার মেয়র নির্বাচিত হলে তরুণ প্রজন্মের জন্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ওয়ার্ডগুলোতেও কমিউনিটি হল করে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সূচনা করা হবে। মহল্লায় মহল্লায় মাদক প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হবে।’

সর্বশেষ খবর