বর্ষা মৌসুমের মাঝামাঝি এসে বছরের সবচেয়ে উষ্ণ দিনটি পার করল রাজধানীবাসী। আবহাওয়া অফিস গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এই তীব্র গরমে নাভিশ্বাস উঠছে রাজধানীবাসীর। নেই বৃষ্টি, অন্যদিকে প্রচণ্ড রোদ। বৈদ্যুতিক পাখায়ও যেন ঘরে কমছে না গরম। তীব্র গরমে সেকেন্দর আলীর (৫৮) মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সন্ন্যাসী গ্রামে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, এ অবস্থা কাটতে লাগবে দু-এক দিন। আজকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। তবে আজ থেকে তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হলে আগামীকাল বৃষ্টি বাড়বে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেছেন, বৃহস্পতিবার (গতকাল) বছরের সবচেয়ে গরম দিন গেল ঢাকায়। বৃষ্টিহীন দিনে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় গরম অনুভূত হয়েছে তাপমাত্রার চেয়েও ঢের। আগের দিন বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ঢাকার তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। তবে শ্রাবণের শুরুতে বৃষ্টি না থাকায় এমন আবহাওয়া অস্বাভাবিক নয় বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদ নাজমুল হক। ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা পাঁচ দশকের সর্বোচ্চ। আবহাওয়াবিদরা জানান, দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি না থাকায় অস্বস্তিকর গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রংপুরের রাজারহাটে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবারের গরমের মৌসুমে ১৫ জুন রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠেছিল।কুমিল্লা, নোয়াখালী অঞ্চলসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার যে তাপপ্রবাহ চলছে, আজও তা অব্যাহত থাকতে পারে। আজ দেশের কোথাও কোথাও মিলতে পারে বৃষ্টিও দেখা। থার্মোমিটারের পারদ চড়তে চড়তে যদি ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে, আবহাওয়াবিদরা তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলেন। উষ্ণতা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, মৌসুমি বায়ু এখন বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয়। উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা মাঝারি ধরনের। তাপমাত্রা যেভাবে বেড়েছে তাতে পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।