রবিবার, ২২ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিটি নির্বাচন
সিলেট

সড়কে অবস্থান নিলেন আরিফ

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সড়কে অবস্থান নিলেন আরিফ

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গতকাল হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিলেট। বিএনপির দুই কর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনা উত্তাপ ছড়ায় মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর শিবিরে। ক্ষুব্ধ আরিফ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের নিয়ে সড়কেই বসে পড়েন। তার প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি ‘টক অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়। একপর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের দিকে চড়াও হন তিনি। শেষ পর্যন্ত গ্রেফতারকৃতরা নিয়মিত মামলার আসামি জানার পর নেতা-কর্মীদের নিয়ে ফিরে যেতে হয় আরিফকে। গত শুক্রবার নগরীর সুবিদবাজারে মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ হান্নানের মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টে হামলা করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার দিবাগত রাতে। নগরীর ঝালোপাড়ার ১০৮ নম্বর বাসা থেকে রাসেল আহমদ ও সুমন আহমদ নামে বিএনপির দুই কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের নগরীর উপশহরস্থ ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে রাখা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল দুপুর ২টার দিকে উপশহরস্থ মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) কার্যালয়ে ছুটে যান বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি তার দুই কর্মীকে ছেড়ে দিতে পুলিশের কাছে দাবি জানান। কিন্তু সাড়া না পেয়ে উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনেই অবস্থান নেন আরিফ।

তার সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এম এ হক, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, জেলা বিএনপি সভাপতি আবুল কাহের শামীম, সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপি সভাপতি নাসিম হোসাইন, যুগ্মসম্পাদক আজমল বখত সাদেক, সহসভাপতি নাজমুল ইসলাম, ছালেহ আহমদ খসরু, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গৌছ, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী প্রমুখ ছিলেন। খবর পেয়ে বিএনপির বেশকিছু নেতা-কর্মী সেখানে জড়ো হন। সবাই উপ-পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সামনের সড়কে বসে পড়েন। প্রায় দুই ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন তারা। বিকাল ৪টার দিকে মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বিএনপি নেতাদের জানান, ওই দুজনকে ওসমানীনগর থানার একটি নিয়মিত মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।

এ সময় আরিফুল হক চৌধুরী উত্তেজিত হয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রয়েছে, এটা কেন আগে বলা হয়নি। তাদের আটক নিয়ে পুলিশ লুকোচুরি করেছে বলেও দাবি করেন তিনি। একপর্যায়ে উপ-পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সরে যেতে বললে শাহপরান থানার ওসি আখতার হোসেনের সঙ্গে বাগিবতণ্ডায় জড়ান আরিফ। এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমাকে কি পেটাবেন? পেটান! আমি এসব ভয় করি না।’ এরপর বিএনপি নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন আরিফ।

এদিকে নির্বাচনী প্রচারে কালও ব্যস্ত সময় পার করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী। নগরীর করেরপাড়া, পাঠানটুলা ও লন্ডনী রোড এলাকায় প্রচারণা চালান কামরান। আরিফ নগরীর জেলরোড, নয়াসড়ক ও উপশহরে গণসংযোগ করেন। আরিফের পক্ষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামছুজ্জামান দুদুও নগরীতে প্রচারণা চালান।

গতকাল বিএনপির প্রার্থী আরিফের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সভা করায় এ অভিযোগ করেন কামরানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী।

গত শুক্রবার নগরীর সুবিদবাজারে মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ হান্নানের মালিকানাধীন একটি রেস্টুরেন্টে হামলা চালান ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। এ নিয়েও স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর