শনিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

মসলার দাম বাড়ছে নানা অজুহাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মসলার দাম বাড়ছে নানা অজুহাতে

বাজার দর

ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে ঈদুল আজহার অনেক আগেই মসলার দাম বাড়িয়ে চলেছেন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছয় ধরনের মসলার দাম কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মিরপুর বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মসলার পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুম শেষ হওয়ায় বিশ্ববাজারে কিছু মসলার দাম এখন চড়া। বন্দরে কনটেইনারজটের কারণে সময়মতো আমদানি করা মসলা হাতে আসছে না। এর পাশাপাশি চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। মসলার পাইকারি ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদ বলেন, রাজধানীর বাজারে এলাচির দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। পাশাপাশি জিরা, দারুচিনি, গোলমরিচ, জায়ফল ও লবঙ্গের দাম প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৬০ টাকা  বেড়েছে। তার মতে, দেশ-বিদেশে মানভেদে মসলার দামে অনেক বেশি ব্যবধান থাকে। দেশে মসলার চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে ঈদুল আজহায়। এ সময় মাংস রান্নার জন্য  বাড়তি পরিমাণে জিরা, এলাচি, দারুচিনি,  গোলমরিচ, লবঙ্গ ইত্যাদি মসলা কেনেন ক্রেতারা। এসব মসলাকে দেশে গরম মসলা বলা হয়। এগুলো দেশে উৎপাদিত হয় না। চাহিদার প্রায় পুরোটাই বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে এ চাহিদা মেটানো হয়।

খুচরায় প্রতি ১০০ গ্রাম এলাচি মিলছে ১৭০-১৮০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। পাইকারিতে ভারতীয় জিরার দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা বেড়ে এখন হয়েছে ৩২০ টাকা। এই জিরা খুচরা বাজারে প্রতি ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। বাজারে অবশ্য সিরিয়া ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা জিরার দাম ভারতীয় জিরার চেয়ে বেশি। এ দুটি দেশের জিরা প্রতি কেজি ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দারুচিনি আমদানি হয় চীন ও ভিয়েতনাম থেকে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দারুচিনির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা গতকাল কারওয়ান বাজার থেকে প্রতি কেজি চীনা দারুচিনি কিনেছেন ২৭০ টাকায়। ভিয়েতনামের দারুচিনি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২৪০ টাকায়। খুচরা বাজারে দারুচিনি প্রতি ১০০ গ্রাম ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া এলাচির দর কেজিতে ১০০ টাকা এবং জিরা, দারুচিনি,  গোলমরিচ, জায়ফল ও লবঙ্গ কেজিতে ২০-৬০ টাকা বেড়েছে।

দেশে জায়ফলের চাহিদা তুলনামূলক কম। এটি আমদানি হয় শ্রীলঙ্কা ও ভারত থেকে। মিরপুর বাজারের পাইকারি মসলা ব্যবসায়ী ওসমান গণি বলেন, এ বাজারে জায়ফল প্রতি কেজি ৪০০ টাকা ও গোলমরিচ প্রতি কেজি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ দুটি মসলা খুচরায় ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজি ৫৫০ টাকায়। লবঙ্গ আমদানি হয় ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মাদাগাস্কার ও ব্রাজিল থেকে। দেশ ও মানভেদে লবঙ্গের দাম বেড়েছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বাজারে ভারতীয় লবঙ্গ প্রতি কেজি ৮৮০-৮৯০ টাকা ও ইন্দোনেশিয়ার লবঙ্গ ৯২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় প্রতি ১০০ গ্রাম লবঙ্গ মিলছে ১০০ টাকায়। জানতে চাইলে বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি অমর কান্তি দাশ বলেন, মসলার পর্যাপ্ত মজুদ আছে। ফলে ঈদে সরবরাহে কোনো সংকট হবে না। এ ছাড়া ভারতের কয়েকটি প্রদেশে বন্যার কারণে এলাচির আবাদ নষ্ট হয়েছে। ফলে সেখানে দাম বেড়ে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। তবে জিরা, দারুচিনি, গোলমরিচসহ অন্যান্য মসলার দাম তেমন একটা বাড়েনি বলে তিনি দাবি করেন।

সর্বশেষ খবর