শনিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

বেড়েই চলেছে সব ধরনের সবজি ও মসলার দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেড়েই চলেছে সব ধরনের সবজি ও মসলার দাম

রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে সব ধরনের সবজি ও মসলার দাম বেড়েই চলেছে। মহানগরীর অধিকাংশ কাঁচাবাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় সবজিতে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। আর মসলায় বেড়েছে ৫০ থেকে ২০০ টাকা।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান ও মিরপুর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুনের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে এখন ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। প্রতি কেজি শসা ১০ টাকা বেড়ে ৪০, টমেটো ৯০, ঢেঁড়স ৪০, পটোল ৪০, বরবটি ৬০ এবং কাঁকরোল ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ১৪০, পেঁপে ৩০, করলা ৬০, গাজর ৫০, আলু ২২ টাকা কেজি এবং প্রতি পিস বাঁধাকপি আকারভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ধনেপাতা এক কেজি ১৬০ টাকা, কাঁচাকলা হালি ২৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস আকারভেদে ৬০ টাকা, কচুর ছড়া ৪০ টাকা, লেবু হালি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জানা গেছে, টানা বৃষ্টি ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অজুহাতে গত সপ্তাহে বেশকিছু সবজির দাম বেড়ে যায়। এখন বৃষ্টি ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন না থাকলেও বেড়ে যাওয়া দাম আর কমেনি।

দুই বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, টানা বৃষ্টির কারণে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৬০ টাকায়, কক মুরগি ২১০ টাকা। গরুর ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে সরকারের নির্ধারণ করা দামেই।

শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত শিম বেশ আগেভাগেই বাজারে চলে এসেছে। তবে দাম বেশ চড়া। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ফুলকপি, পাকা টমেটো ও ওস্তে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিম ও ফুলকপি শীতকালীন সবজি। শীত আসতে এখনো বেশ বাকি আছে। তবে শীতের আগাম সবজি হিসেবে শিম ও ফুলকপি বাজারে চলে এসেছে। তাই এ দুটি সবজির দাম একটু চড়া। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মান ও বাজারভেদে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকায়। ছোট আকারের ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। ওস্তের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। আর পাকা টমেটো ১০০-১২০ টাকা  কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মসলার বাজার :  প্রতি বছর-ই ঈদুল আজহায় কোরবানিকে ঘিরে বাড়ে মাংসে ব্যবহৃত মসলার দাম। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ বাজারে মসলার বাড়তি চাহিদা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি। পাশাপাশি পণ্যের আমদানি খরচও আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়েছে। তবে বাজারে মসলার দাম বাড়ার জন্য বরাবরের মতো খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন আমদানিকারকদের। তারা বলেন, আমদানিকারকদের কাছ থেকে আমাদের বেশি দামে মসলা কিনতে হচ্ছে বলেই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মিরপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদুল আজহার বেশ আগেই সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে। কয়েক দিন আগেও কেজি প্রতি (মানভেদে) এলাচের দাম ছিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। বর্তমানে কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯২০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায়। একইভাবে বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা জিরার কেজি ছিল ২৮৩ থেকে ২৯৭ টাকা। বর্তমানে এক কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৩৫ টাকায়। সিরিয়া থেকে আমদানি করা জিরার কেজি ছিল ৩৯০ টাকা, বর্তমানে ৪৫০ টাকা। চীন থেকে আমদানি করা জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৯৫ টাকায়। আর ১১০ টাকা কেজির মিষ্টি জিরা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। বাজারে এক সপ্তাহ আগে দারুচিনির দাম ছিল কেজি ২৬৮ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে প্রতি কেজি জয়ফল বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। প্রতি কেজি লবঙ্গ মানভেদে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে গোলমরিচ (কালো) ৯৫০ টাকা, গোলমরিচ (সাদা) ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে কেজি হাজার টাকার ওপরে ছিল না। এ ছাড়া বাজারে বাড়তি দামে জয়ত্রী ২ হাজার ১০০, ধনিয়া ১০০ থেকে ১২০, ভারতীয় হলুদ ২১৫, ভারতীয় মরিচ ১৫০, দেশি শুকনা মরিচ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা মসলার দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন কারওয়ান বাজারের মেসার্স কামরুল মসলা বিতানের মালিক কামরুল হাসান। তিনি বলেন, দেশে প্রায় সব ধরনের মসলা আমদানি করতে হয়। এসব মসলার চাহিদা কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বহুগুণ বেড়ে যায়। কারণ দেশে মসলা আমদানিকারক হাতে গোনা কয়েকজন। ফলে ব্যাপক চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে অতি মুনাফা লুটে নেয় দেশের গুটিকয়েক আমদানিকারক। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে- সে প্রভাবও দেশের মসলার বাজারে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর