বুধবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দালালের নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম মেডিকেল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রোগী মরিয়ম বেগমকে চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন এমআরআই করাতে। গ্রাম থেকে আসা মরিয়ম হাসপাতালের নিচতলার প্রধান প্রবেশপথ চত্বরে চিকিৎসকের পরামর্শপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তখন একজন মাঝবয়সী মহিলাকে (দালাল) বললেন, ‘ডাক্তার বলেছেন এমআরআই করাতে। ওইটা কোন দিকে?’ সঙ্গে সঙ্গে ওই অপরিচিত মহিলা ‘হাসপাতালে করানো যাবে না। আমার সঙ্গে আসেন, আমি দেখিয়ে দেব’ এই কথা বলে তাকে নিয়ে যান বেসরকারি ল্যাবে। এভাবে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, করিডর ও চত্বরে ঘুরঘুর করা দালালের দৌরাত্ম্যে বিপাকে পড়ছেন সাধারণ রোগীরা। তবে সরকারি এই হাসপাতালে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগীদেরই বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের ৪২টি ওয়ার্ড, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান, জরুরি ও বহির্বিভাগের সামনে প্রতিনিয়তই ঘুরঘুর করে দালাল। রোগীর অবস্থা ও পরিবেশ বুঝে তারা নানাভাবে ফুসলিয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিকে নিয়ে যায়। ৪২টি ওয়ার্ডে অর্ধশত মহিলা ও পুরুষ দালাল অবস্থান করে। হাসপাতালে চলমান গণশুনানিতে প্রতিবারই দালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে ভুক্তভোগী রোগীদের। অভিযোগ আছে, এসব দালালের সঙ্গে হাসপাতালের আশপাশের বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রগুলোর একটি অলিখিত ‘কমিশন চুক্তি’ থাকে। এর আলোকে প্রতি রোগীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের কমিশন পায় দালালরা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নাম প্রকাশ না করে এক দালাল বলেন, ‘১৭ বছর ধরে এখানে কাজ করছি। কোথায় কী আছে সব আমার মুখস্থ।’ চমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালের রোগীদের আমরা সব সময় বলি তারা যেন অপরিচিত কারও মাধ্যমে কোনো কাজ না করান। এমনটি করলে তাদের দালালের খপ্পরে পড়তে হয়। দালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা প্রায় সময়ই শুনি। কিন্তু নাম-ঠিকানাসহ নির্দিষ্ট প্রমাণ দিয়ে কেউ অভিযোগ করে না। অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর