মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জোটের প্রার্থী নিয়ে চিন্তিত আওয়ামী লীগ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

জোটের প্রার্থী নিয়ে চিন্তিত আওয়ামী লীগ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে মহাজোটের চার আসনের শরিক দল নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। কারণ জোট থেকে প্রার্থী নিশ্চিত করলে দলীয় মনোনয়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে তাদের আশঙ্কা। এসব নিয়ে দলের মধ্যে চলছে ক্ষোভ, অসন্তোষসহ দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। এসব বিষয় নিয়ে সম্প্রতি চট্টগ্রামের তৃণমূলে প্রতিনিধি সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতেও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, চট্টগ্রামের কোতোয়ালি, চান্দগাঁও-বোয়ালখালী (আংশিক), হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি আসনে আবারও মহাজোটের প্রার্থী মনোনীত হবে, নাকি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী থাকবেন- তা নিয়ে আওয়ামী লীগে নানা গুঞ্জন চলছে। এই চার আসনে জোটের প্রার্থী ছাড়াও দলের মন্ত্রীসহ একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী আছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা-কর্মী ক্ষোভের সঙ্গে এই প্রতিনিধিকে জানান, এসব আসনের বর্তমান এমপিদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সুসম্পর্ক নেই। তাদের কারণে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগের দলীয় এমপি না থাকায় এসব আসনের শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচিতে থাকেন না। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও এজন্য হতাশার মধ্যে রাজনীতি করছেন। তবে এবার জোট নয়, দলের প্রার্থী চান তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এতে সাংগঠনিক তৎপরতাসহ দলীয় কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনে জোটের বিষয়ে কত আসন ছেড়ে দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নেতাদের নিয়েই জোট থাকবে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তবে গুরুত্ব বুঝে জোটের কোন কোন আসন ছেড়ে দেওয়া হবে— তা জোটের শীর্ষ নেতাদের আলোচনার মধ্য  দিয়ে ঠিক হবে। অবশ্য জোট এবং দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম-৯ কোতোয়ালি আসনে মহাজোট থেকে বর্তমানে এমপি আছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এ সংসদীয় আসনটি চট্টগ্রামের অন্যান্য আসনের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আসন। এখানে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে এবারের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রয়াত এবিএম  মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর মুক্তিযোদ্ধা জহুর আহমেদ চৌধুরীর ছেলে জসিম উদ্দিন, সাবেক ছাত্রনেতা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ-অর্থ সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, প্রয়াত নেতা সাবেক মন্ত্রী এমএ মান্নানের ছেলে যুবলীগ নেতা আবদুল লতিফ টিপুসহ অনেকেই। চট্টগ্রাম-৮ আসনের (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী-আংশিক) জোটের দুইবারের সংসদ সদস্য জাসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাঈনুদ্দিন খান বাদল। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আলহাজ আবদুচ ছালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুসলেম উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন। হাটহাজারী-৫ আসনের জোটের দুইবারের সংসদ সদস্য হলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বর্তমান বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এখানে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে আলোচনায় আছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ সালাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুচ গণি চৌধুরী, জসিম উদ্দিন শাহ, মনজুর আলম মন্জুসহ বেশ কয়েকজন। ফটিকছড়ি-২ আসনে আওয়ামী লীগের জোটের দুইবারের সংসদ সদস্য বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি। এখানে আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগের ত্যাগী অনেক নেতা। তাদের মধ্যে আছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মরহুম রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খতিজাতুল আনোয়ার সনি, মরহুম আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল-হারুনের ভাগ্নে সাদাত আনোয়ার সাদি প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর