বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বরিশাল সিটির ৯ কেন্দ্রে ফের ভোটগ্রহণ শিগগিরই

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল সিটি নির্বাচনে পুনরায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৯টি কেন্দ্রে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন যে আটটি কেন্দ্রের ফল বাতিল করেছে সেটির সঙ্গে প্রিসাইডিং অফিসারের নির্দেশে ভোট স্থগিত হওয়া কেন্দ্রেও আবার ভোটগ্রহণ হবে। দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি এখনো। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান আগামী ১৩ অক্টোবর পুনরায় ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করে কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এদিকে নির্বাচন কমিশন ১৭টি কেন্দ্রের অনিয়ম তদন্ত করলেও শুধু ৯টি কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্তকে প্রহসন হিসেবে দেখছেন বিরোধীদলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীরা। উল্লেখ্য, ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি নির্বাচনে ১২৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নজিরবিহীন ভোট কারচুপির প্রতিবাদে সকাল ১১টার মধ্যে একমাত্র সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী ছাড়া অপর ৫ প্রতিদ্বন্দ্বী একযোগে নির্বাচন বর্জন ও পুনরায় ভোট গ্রহণের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানান। শুধু মেয়র পদে নয়, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদেও ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকরা কেন্দ্রে অনিয়ম পাওয়ায় তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন ওইদিন সন্ধ্যায় ১৫টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা স্থগিত রাখেন। এ ছাড়া অনিয়মের অভিযোগে ওইদিন সকাল ১১টার মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দা মজিদুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন           প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অর্ধ শতাধিক কেন্দ্রে ভোটে অনিয়মের লিখিত অভিযোগ আসে। নির্বাচনের দিন গভীর রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ঘোষণা করেন। এ ছাড়া কয়েকটি সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মেয়র এবং কয়েকটি সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা না করায় জনমনে সংশয়-সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে দুই দফায় ওইসব অভিযোগ তদন্ত করেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। দুই দফা তদন্ত হলেও দ্বিতীয় দফা কমিশনের অনুমতি ছাড়া তদন্ত হওয়ায় সেটি আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। এ কারণে প্রথম দফা তদন্তে ৮টি কেন্দ্রে ভোটে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় ওইসব কেন্দ্রের ফল বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন পুনরায় ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়।

 এই কেন্দ্রগুলো হলো— ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলেকান্দা ফারিয়া কমিউনিটি সেন্টার (পুরুষ), ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আগুরপুর রোডের সরকারি মহিলা কলেজ (মহিলা) ও সদর রোডের সিটি কলেজ (পুরুষ), ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিএন্ডবি রোডের শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (পুরুষ) ও শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (মহিলা), ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমাথা আরএম সাগরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ), ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রূপতলী হাউজিং শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (পুরুষ) এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলী জাগুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া বলেন, তার ওয়ার্ডের ৫টি কেন্দ্রে ভোটে অনিয়মের প্রমাণসহ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কমিশন মাত্র একটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর