শুক্রবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নাব্য সংকট বিকল্প চ্যানেলেও

দক্ষিণাঞ্চলের নৌ যোগাযোগ ঝুঁকিতে ♦ যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা

রাহাত খান, বরিশাল

নাব্য সংকট বিকল্প চ্যানেলেও

ডুবোচর জেগেছে ঢাকা-বরিশাল রুটের মিয়ারচর চ্যানেলে —বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানী ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের নৌযোগাযোগ আবারও ঝুঁকিতে পড়েছে। দীর্ঘ ডুবোচরের কারণে মেঘনার মিয়ারচর চ্যানেল গেল ঈদুল আজহার আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে বিকল্প রুট হিসেবে মেঘনার কালীগঞ্জ চ্যানেল ব্যবহারের নির্দেশ দেয় বিআইডব্লিউটিএ। অতিরিক্ত সময় এবং জ্বালানির খরচ করে গন্তব্যে যাতায়াত করে আসছিল নৌযানগুলো। কিন্তু মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ডুবোচরের কারণে এখন কালীগঞ্জ চ্যানেলেও আটকে যাচ্ছে বিশাল বিশাল যাত্রী ও পণ্যবাহী জাহাজ। এতে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার যাত্রীর জানমাল এবং নৌযান মালিকদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেলগুলোতে জরুরি ড্রেজিংয়ে দাবি জানিয়েছেন লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা। রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের নৌযোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে আপাতত কালীগঞ্জ চ্যানেলে দিক নির্দেশক মার্কিং করাসহ পুরনো পরিত্যক্ত মিয়ারচর চ্যানেল সচল করার জন্য ড্রেজিং শুরুর কথা জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক। একটা বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গেল মে মাসে নৌযোগে হিজলার চরমেঘা মৌজা পরিদর্শনে গিয়েছিল সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। ওই সময় দিনের আলোতে মেঘনার গুরুত্বপূর্ণ মিয়ারচর চ্যানেল দেখিয়ে ভয়াবহ নাব্যতা সংকটের কথা বলছিলেন নৌবহরগামী এমভি এডভেঞ্চার-১ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মো. জামাল হোসেন। তার ভাষায়, খালী চোখে দেখলে মনে হয় মেঘনায় পানি থৈ থৈ করছে। বিশাল প্রশস্ত নদীর দুই তীর খালি চোখে দেখা যায় না। কিন্তু মেঘনার মিয়ারচর পয়েন্টে এক থেকে দেড় মিটারের বেশি পানির গভীরতা নেই। কিন্তু বরিশাল-ঢাকা রুটের বড় বড় নৌযানগুলো চলতে পানিতে অন্ততপক্ষে ৩ মিটার গভীরতা প্রয়োজন। ওই লঞ্চের সুকানি আমীর হোসেন জানান, নাব্যতা কম থাকায় গভীর রাতে যাত্রীবাহী বড় বড় নৌযানের তলানি ডুবো চরে ঠেকে যায়। এতে লঞ্চের তলানি ফেঁটে যেতে পারে। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই ওই রুট দিয়ে চলছিল ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের নৌযানগুলো। কিন্তু গেল ঈদুল আজহার আগে কর্তৃপক্ষ মিয়ারচর চ্যানেল দিয়ে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে মেঘনার উলানিয়া কালীগঞ্জ চ্যানেল ব্যবহারের নির্দেশ দেয়। এরপর থেকে মেঘনার কালীগঞ্জ চ্যানেল দিয়েই চলছিল বিশাল বিশাল নৌযানগুলো। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সেই কালীগঞ্জ চ্যানেলের ডুবো চরে আটকে যাচ্ছে নৌযানগুলো। এদিকে বিআইডব্লিউটিএর পরিত্যক্ত ঘোষণা করা মিয়ারচর চ্যানেল ড্রেজিং করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য নৌবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে নৌবাহিনী মিয়ারচর চ্যানেলে সরেজমিন প্রাথমিক সার্ভে কাজ শুরু করেছে। কিন্তু নদীতে প্রচুর স্রোত থাকায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর