শনিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বেসরকারি বিনিয়োগে রেকর্ড দক্ষিণে

বদলে যাচ্ছে অর্থনীতি গড়ে উঠছে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনা, বাগেরহাট, যশোরের বৃহৎ অংশ জুড়ে শিল্পায়ন ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গত কয়েক বছরে এখানে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। পুরনো ধাঁচের হার্ডবোর্ড, নিউজপ্রিন্ট মিল ও পাটকলের জায়গায় খুলনার পরিচিতি এখন ফ্রোজেন ফুড, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, পাওয়ার প্লান্ট ও জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গত এক মাসে খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বেসরকারি খাতে প্রায় ২২১ কোটি টাকার রেকর্ড বিনিয়োগ হয়েছে। পাশাপাশি বটিয়াঘাটা ও তেরখাদায় গড়ে তোলা হচ্ছে অর্থনৈতিক জোন। বেসরকারি বিনিয়োগের শীর্ষে রয়েছে গ্যাস ও সিরামিক, ফ্রোজেন ফুড, জুট বেইলিং ও অটোমেটিক ব্রিকস নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।

বিনিয়োগকারীদের মতে, মোংলা বন্দরের আধুনিকীকরণ, ইপিজেড চালু ও উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিনিয়োগ কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, খুলনা অঞ্চলে শিল্পবান্ধব পরিবেশ গড়ে ওঠায় বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বহুগুণ বেড়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের আওতায় ৩৪টি নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন হয়েছে। প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। ওই অর্থবছরে প্রতি মাসে গড়ে ১৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের শুরুতে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

এদিকে খুলনা জোনকে সম্ভাবনায় ‘গ্রোথ সেন্টার’ বা উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক ড. শাহনেওয়াজ নাজিমুদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগের কারণে ব্যাপক কর্মস্থলে বদলে যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতি। এখানকার চিংড়ি, সিমেন্ট ও কৃষিভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো অন্যতম গ্রোথ সেন্টার হিসেবে কাজ করছে। উৎপাদন ও পণ্য বিপণনের ক্ষেত্রে পরস্পরের সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টি করতে পারলে শিল্পগুলো অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস বলেন, সহজলভ্য শ্রম, সড়ক, রেল ও নৌপথে পণ্য পরিবহনের সুবিধা, প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মতো পর্যাপ্ত জমি—এসব কারণে দক্ষিণাঞ্চলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে উঠেছে। এরই মধ্যে খুলনা ও বাগেরহাটে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অনেক কোম্পানি বিনিয়োগের চেষ্টা করছে। এটা এ অঞ্চলের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। তিনি বলেন, মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন ও পদ্মা সেতু চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর