বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৯টি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। ৯টি কেন্দ্রের নির্বাচন তদারকির জন্য নিয়োগ করা হয়েছে আটজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও কেন্দ্রের বাইরে দায়িত্ব পালন করবে দুই প্লাটুন বিজিবিসহ র‌্যাব-পুলিশের টহল দল, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও রিজার্ভ ফোর্স। গত ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে অনিয়মের কারণে আটটি কেন্দ্রের ফল বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া একটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। এই ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। কেন্দ্রগুলো হলো নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলেকান্দা ফারিয়া কমিউনিটি সেন্টার (পুরুষ), ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আগরপুরের সরকারি মহিলা কলেজ (মহিলা) ও সদর রোডের সিটি কলেজ (পুরুষ), ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিঅ্যান্ডবি রোডের শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (পুরুষ) ও শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (মহিলা), ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমাথা আরএম সাগরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ), ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রূপতলী হাউজিং শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (পুরুষ), ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলী জাগুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দা মজিদুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র।

এই ৯ কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৬ হাজার ১১৫জন। ৯ কেন্দ্রে অনিয়মের কারণে সাধারণ ওয়ার্ড নম্বর ১, ১৪, ১৭, ২২, ২৩ ও ২৪ এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফল আটকে আছে। আজকের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে চূড়ান্তভাবে সব সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফল নির্ধারিত হবে। গত ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি নির্বাচনে ১২৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে  বেলা ১১টার মধ্যে একমাত্র সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী ছাড়া অপর পাঁচ প্রতিদ্বন্দ্বী একযোগে নির্বাচন বর্জন করে পুনরায় ভোট গ্রহণের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। শুধু মেয়র পদে নয়, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদেও ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকরা কেন্দ্রে অনিয়ম পাওয়ায় তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন ওইদিন সন্ধ্যায় ১৫টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা স্থগিত করেন। এ ছাড়া অনিয়মের অভিযোগে ওইদিন বেলা ১১টার মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দা মজিদুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।

পরবর্তীতে দুই দফায় ওইসব অভিযোগ তদন্ত করেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। দুই দফা তদন্ত হলেও দ্বিতীয় দফা কমিশনের অনুমতি ছাড়া তদন্ত হওয়ায় সেগুলো আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। এ কারণে প্রথম দফা তদন্তে ৮টি কেন্দ্রে ভোটে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় ওইসব কেন্দ্রের ফল বাতিল ঘোষণা করে পুনরায় ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।

এদিকে নির্বাচন কমিশন অনিয়মের অভিযোগে ৯টি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নির্বাচনের ২ মাসের ব্যবধানে গত ৩ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সাদিক আবদুল্লাহকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। একই দিন ২৪জন সাধারণ ও ৭জন সংরক্ষিত কাউন্সিলরকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। সিটি নির্বাচনে ১২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে যে ৯টি কেন্দ্র বাদে ১১৪টি কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ পেয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার পান ১৩ হাজার ৭৭৬ ভোট