সোমবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জগন্নাথ হল ট্র্যাজেডি দিবস আজ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল। রাত প্রায় পৌনে ৯টা। জনপ্রিয় সাপ্তাহিক নাটক ‘শুকতারা’ দেখতে টিভি রুমে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিড়। সেখানে ছিল হলের কর্মচারী ও অতিথিরাও। নাটক শুরু হওয়ার পর সবাই গভীর মনোযোগ দিয়ে তা উপভোগ করছিল। এমন সময়ে হঠাৎ প্রকট শব্দে ধসে পড়ে টিভি রুমের ছাদ। মুহূর্তের মধ্যেই টিভি রুম পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন ৪০জন। আহত হয়েছিলেন শতাধিক। সেই ভয়াবহ ‘জগন্নাথ হল ট্র্যাজেডির’ এমন বর্ণনা দেন দিলীপ চন্দ্র বিশ্বাস। সেদিন দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। তখন তিনি মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে ঢাবির বিজ্ঞান লাইব্রেরির ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কর্মরত। তিনি বলেন, ঘটনার দিন আমি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় আমার রুমমেট তুষার কান্তি রায় অনুরোধ করে নাটক দেখতে যেতে। তার অনুরোধে অনিচ্ছা সত্ত্বেও নাটক দেখতে যান। তিনি বলেন, ‘নাটক কিছুক্ষণ দেখার পর বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছিল। ওই সময় মনে হলো ওপর থেকে কিছু একটা পড়ছে। তত্ক্ষণাৎ তুষারকে জিজ্ঞেস করলাম কী হচ্ছে? সে আমাকে বলল, পালা। এরপর দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম। বের হওয়ার সময় ছাদ থেকে একটি রড আমার কপালে পড়ে। এ সময় আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। দীর্ঘ ২৭ দিন পর আমার জ্ঞান ফেরে। জ্ঞান ফেরার পর শুনেছিলাম তুষার আর নেই। এরপর থেকে প্রতি বছর এই দিনটিকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।

 মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এ বছরও দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর মধ্যে রয়েছে সব হল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিশেষ প্রার্থনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সর্বশেষ খবর