বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিল্পকলায় ‘প্রণয় যমুনা’

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শিল্পকলায় ‘প্রণয় যমুনা’

রাধাকৃষ্ণের অমর প্রেম সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে করেছে সমৃদ্ধ। গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, নৃত্যনাট্যের মাধ্যমে সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে রাধা আর কৃষ্ণের চিরায়ত প্রেমকে তুলে ধরেছেন লেখক আর শিল্পীরা। আর চিরায়ত প্রেমের এই জুটির প্রেমের আখ্যান নিয়ে সুবচন নাট্য সংসদ মঞ্চায়ন করেছে প্রেম-বিরহের অনবদ্য নাটক ‘প্রণয় যমুনা’। এ নাটকের আখ্যানে উঠে এসেছে রাধা আর কৃষ্ণের অভিসার, বিরহ-মিলন, বৃন্দাবন, বাঁশির সুর আর যমুনা নদী। গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘রাধাকৃষ্ণ’ উপন্যাস অবলম্বনে আসাদুল ইসলামের নাট্যরূপে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন সুদীপ চক্রবর্তী। যমুনার তীরে বাঁশি বাজিয়ে, যমুনার জলে সাঁতার কেটে, যমুনার তরঙ্গে নৌকা ভাসিয়ে বড় হয়েছে কৃষ্ণ। এ যমুনার পাড়েই একদিন কৃষ্ণ দেখা পায় অপরূপ রাধাকে। তার পরই রাধার সোনার পুত্তলি ছবি কৃষ্ণের মনে গাঁথা হয়ে যায়, শয়নে স্বপনে কেবলই রাধার মুখচ্ছবি। বন্ধুদের সাহচর্যে কৃষ্ণ কৌশলে শুল্ক আদায়কারীর ছদ্মবেশে রাধার কাছে তার প্রেম নিবেদন করে, কিন্তু তার সে কৌশল ব্যর্থ হয়। এরপর মাঝির বেশ ধরে রাধাকে কৌশলে নৌকায় তুলে যমুনা পাড়ি দেয় কৃষ্ণ। যমুনার জলতরঙ্গে ভাসতে থাকা দুটি প্রাণ পরস্পরের খুব কাছাকাছি হয়, রাধা এবার আর কৃষ্ণকে উপেক্ষা করতে পারে না। যমুনার কূলে কৃষ্ণের বাঁশি শুনে ঘর ছেড়ে ছুটে আসে রাধা তার প্রেমাস্পদ কৃষ্ণের কাছে। ভালোবাসার অসুখে ভুগে প্রেমে পাগলপারা রাধার স্বাস্থ্যহানি ঘটলে চলে যায় ব্রজপুরী, তার বাপের বাড়ি। সেখানেও হানা দেয় কৃষ্ণ। যমুনার তীরে

পূর্ণিমা রাতে তাদের আবার দেখা হওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে যখন কৃষ্ণ বৃন্দাবনের পথে পা বাড়ায়, পথিমধ্যে দেখা হয় সান্দীপনি ঋষির সঙ্গে। ঋষি কৃষ্ণের বিস্মৃতি ভাঙায়। রাজা কংসের কারাগারে কৃষ্ণের বাবা, মা বন্দী। তাদের উদ্ধার ও ধরণিকে পাপমুক্ত করে ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায় কৃষ্ণকে, ঋষির এ আহ্বান ফেরাতে পারে না কৃষ্ণ। জীবনের এই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে প্রেমিক কৃষ্ণকে প্রেমের মায়া দূরে সরিয়ে পাড়ি দিতে হয় অজানার পথে। একদা কৃষ্ণ যে প্রেমের দীপাবলি জ্বালিয়েছিল রাধার মনে, ভালোবাসার সেই দীপ হাতে রাধা যমুনার তীরে এসে দাঁড়ায়। কৃষ্ণের ফিরে আসার অপেক্ষায় রাধা নিশ্চল। আচমকা দূরে কোথাও বেজে ওঠে অচেনা বাঁশির চেনা সুর। মনে হয় যমুনার জলে নৌকা ভাসিয়ে কেউ যেন এলো এইমাত্র। কিন্তু কেউ আসে না, কেউ না, রাধার জন্য রাজকার্য ফেলে কেউ আসে না। রাধার চোখের জল ভেসে যায় প্রণয় যমুনায়। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনী। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহাম্মেদ গিয়াস, মেহেদী হাসান সোহাগ, হোসেন ইমরান, ফজলুল হক রাসেল, যোয়া আযিম, সোনিয়া হাসান সুবর্ণা, আর্য মেঘদূত, তানভীর দিপু, ইমতিয়াজ শাওন রেজা, শাহ্ সালাউদ্দীন, মারুফুর রহমান, সবুজ মিয়া, আরিফ আহমেদ, মো. মহিউদ্দীন আকন, মো. জাকারিয়া ইসলাম, হাবিবা আক্তার অনন্যা, শারমিনা নাজনিন, নাহিদ শ্রাবণী সোমা, ফারজানা ইয়াসমিন, শাহ্ সালাউদ্দিন, লিঠু মণ্ডল প্রমুখ।

 

সর্বশেষ খবর