শিরোনাম
শুক্রবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
বসুন্ধরায় তিন মেলা

বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদর্শন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বব্যাপী পানীয় জলের সংকট মোচনে উদ্ভাবন হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এসব প্রযুক্তি নিয়ে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী। বিশ্বের নামকরা কোম্পানিগুলো নিয়ে এসেছে তাদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য। শুধু বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন নয়, একই প্রযুক্তির মাধ্যমে পাওয়া যাবে বিদ্যুৎ। একটি বাড়িতে ব্যবহার-উপযোগী নানা ধরনের মেশিনারিজ রয়েছে এ প্রদর্শনীতে। গতকাল শুরু হওয়া এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার ড. আদর্শ সুয়েকা, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বেগম রুখসানা কাদের, পারটেক্স স্টার গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার খালিদ মাহমুদ, এম. আলম অ্যান্ড কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফতাব আলম, ম্যাক্স গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক কাজী ইয়ামিনুর রশিদ প্রমুখ। সেমস্-গ্লোবাল-ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট মেহেরুন এন. ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ভোক্তা পর্যায়ে বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করতে নিম্নমানের বোতল ও জারের পানি বাজারজাতের বিরুদ্ধে বিএসটিআইর বিশেষ অভিযান জোরদার করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সুরক্ষায় সম্ভব সব ধরনের নীতিসহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে। নিজস্ব শিল্পের বিকাশ ও আমদানিবিকল্প পণ্য উৎপাদনের জন্য সরকার বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী শুল্ক সুবিধাসহ উদ্যোক্তাদের যে কোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত। তিনি রপ্তানির পরিবর্তে দেশেই জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব আমদানিবিকল্প শিল্প গড়ে তুলতে উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রথম দিনে প্রদর্শনীতে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান এসেছে এ প্রদর্শনীতে। নিরাপদ পানির জন্য এ মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে ঘরে স্থাপন করেই পাওয়া যাবে নিরাপদ পানি। কারখানায় ইটিপি স্থাপন করতে উদ্যোক্তাদের বিশ্বমানের প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। স্টলকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পানিদূষণ ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সারা বিশ্বে। বাংলাদেশও ভয়াবহ এ দূষণের শিকার। এতে ক্ষতির শিকার হচ্ছে সব মানুষ। বিশেষ করে কারখানার মাধ্যমে বেশি পানিদূষণ হয়। পরিবেশ রক্ষা ও পানিদূষণ ঠেকাতে কারখানায় ইটিপি স্থাপন করা বাধ্যতামূলক। মেলায় আধুনিক ইটিপির প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হচ্ছে। সারা দেশের উদ্যোক্তারা এসে সরাসরি দেখছেন। এখানে অর্ডার দিলে প্রকৌশলীরা গিয়ে স্থাপন করে দিয়ে আসবেন ইটিপি। গ্রাম থেকে ঢাকার যে কোনো স্থানে ইটিপি স্থাপন কমর দেওয়া হয়। একাধিক স্টলে গিয়ে দেখা গেছে, কীভাবে ইটিপি কাজ করছে তা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পুরো প্রযুক্তি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এ মেলায় শুধু কারখানার পানিদূষণ নয়, কৃষিতে পানির সমাধান দিতে অংশ নিয়েছে একাধিক প্রতিষ্ঠান। কম মূল্যে পানির পাম্প, গভীর নলকূপ স্থাপনের আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন ক্রেতা-দর্শকরা। প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরিষ্কার পানি সরবরাহ, লবণাক্তহীন পানি, খাবার পানি, প্রক্রিয়াজাত পানি, অপচয়কৃত পানি, জিরো লিকুইড ডিজচার্জ ইত্যাদি বিষয় প্রদর্শনীতে প্রাধান্য পেয়েছে।

পানিসংশ্লিষ্ট সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পণ্য উৎপাদন ও সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন কোম্পানিও এ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে। ভবিষ্যতের আধুনিক প্রযুক্তি, স্বয়ংক্রিয়করণের পণ্য ও সেবা, পানি ব্যবস্থাপনা ও কার্যকর সংরক্ষণ পদ্ধতিসহ পানি ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে এ প্রদর্শনীতে ১৯টি দেশের প্রায় ২২০টি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ৪৮০টি স্টলে বিশুদ্ধ পানি, সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ, নিরাপদ নির্মাণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বৈদ্যুতিক পণ্য ও সরঞ্জাম, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল ইত্যাদি প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত। এ প্রদর্শনী বাংলাদেশের পানি, বিদ্যুৎ ও নির্মাণ খাতের গুণগত মানোন্নয়ন ও উন্নত প্রযুক্তি হস্তান্তরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর