সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাড়ি নয়, যেন লাইব্রেরি

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বাড়ি নয়, যেন লাইব্রেরি

বাড়ির ড্রইং রুম বা শোবার ঘরই শুধু নই, ঘরের ভিতর যে দিকে চোখ পড়বে সেখানেই দেখা যাবে বই আর বই। অনেকে ঘরের ভিতর বইয়ের এমন ভাণ্ডার দেখে হয়তো মনে করবেন বাড়ি নয়, এ যেন লাইব্রেরি অথবা ঘরের ভিতর বইয়ের বাগান। ঘরের ভিতর আলমারি, শোবার খাটের এক পাশে, টেবিলসহ সবখানে শুধু বই, আর বই। আর এসব বইয়ের সংগ্রহশালা ব্যক্তিগতভাবে গড়ে তুলেছেন দিনাজপুরের পরিচিত মুখ মকবুল হোসেন। বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকেন, ডুবে থাকতে ভালোবাসেন এমন একজন মকবুল হোসেন। তিনি তার এ পাঠাগারের নাম রেখেছেন সেঁওতি গ্রন্থাগার। মকবুল হোসেনের ভাষায় সেঁওতি অর্থ সাদা গোলা বা বেহেশত বা স্বর্গীয়। তিনি স্কুলজীবন থেকেই বই পড়া এবং সংগ্রহ শুরু করেন। আস্তে আস্তে গড়া বইয়ের ভাণ্ডারে এখন দশ হাজারের মতো বই আছে বলে জানান তিনি। জ্ঞান অর্জনেই সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মনে করেই তিনি এসব বই সংগ্রহ করেছেন। তার সংগ্রহশালায় রয়েছে, মার্কসবাদ, লেনিনবাদ, মুজিব, এঙ্গেলস, গান্ধীসহ বিশ্বের অনেক খ্যাতিমান রাজনীতিকের জীবনী, দিনাজপুরের ইতিহাস, পবিত্র কোরআন শরিফ, গীতা, বেদ, বাইবেল-ইঞ্জিলসহ প্রধান প্রধান ধর্মগ্রন্থ, ইংরেজি-বাংলা ভাষার নামকরা ব্যক্তিদের বই। এ ছাড়া রয়েছে কবিতা, গল্প, উপন্যাসসহ শিশু সাহিত্য, বড়দের সাহিত্যসহ সাহিত্যের নানা দিগন্তের বহুবিধ বিষয়ভিত্তিক বই।  মকবুল হোসেন দিনাজপুরে এক সময়ের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বাংলাদেশের বহুমুখী আন্দোলন-সংগ্রামেও যুক্ত ছিলেন তিনি। তবে এখন আর সেই সবের মধ্যে নেই। এখন তিনি কবি। কবিতা লিখতে পছন্দ করেন আর ডুবে থাকেন বইয়ের পাতায়। বয়সের ভারে তার চোখ এখন কোটরাগত। বিশাল দাড়ির আড়ালে মুখ ঢাকা পড়ে গেছে অনেকটাই। ৭৩ বছর বয়সের মকবুল হোসেন বলেন, যখন হাফ প্যান্ট পরে স্কুল যেতাম, সেই সময় থেকেই দিনাজপুরের বিখ্যাত আর্য পুস্তকাগারে বসতাম। সেখানে পিটি হতো। সেই পিটিতে অংশ নিতাম। পিটি শেষে সেখানে বসে বই পড়তাম। যখন একটু বড় হলাম তখন বই পড়া নেশায় পরিণত হলো। সেই থেকে বই পড়ছি আর এখনো বইয়ের মধ্যেই আছি।

তিনি ঠাকুরগাঁও বিডি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট ও ডিগ্রি পাস করেন। ঠাকুরগাঁও বিডি কলেজ ছাত্র সংসদের ম্যাগাজিন সম্পাদক ছিলেন। বই পড়ার পাশাপাশি তার বইয়ের সংগ্রহশালায় মাঝে মাঝে সাহিত্যের আসর, আড্ডা বসিয়ে থাকেন মকবুল হোসেন। আসরে স্বরচিত গল্প, কবিতা পাঠ করে থাকেন স্থানীয় সাহিত্যকর্মীগণ। তার মৃত্যুর পর গ্রন্থাগারের বইগুলো যেন সংরক্ষিত থাকে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর