শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
নিবন্ধন বাতিলে আনন্দ মিছিল

জামায়াত নিষিদ্ধ করার দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

‘মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সংগঠন’ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করে দলটির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ও সংস্কৃতিকর্মীরা। গতকাল বিকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগঠন ‘গৌরব-৭১’-এর ব্যানারে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় আনন্দ মিছিলপূর্ব এক সমাবেশে এ দাবি জানান তারা। সমাবেশ থেকে রাজাকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের পরিবারের নাগরিক সুবিধা সংকোচনের দাবিও জানানো হয়। গৌরব-৭১-এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে     প্রধান অতিথির বক্তব্যে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জন্মের আগে থেকেই বাংলাদেশ আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলনে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আলবদর, আলশামস গঠন করে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। বঙ্গবন্ধু তাদের বিচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু ’৭৫-এর পর তা আর হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দিয়েছেন। কিন্তু এই শাস্তি তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। বরং তাদের দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কারও অপরাধের জন্য তাকে শাস্তি দেওয়া যায়। কিন্তু কোনো দলের অপরাধের জন্য তাকে শাস্তি দেওয়ার একমাত্র পন্থা হলো নিষিদ্ধ করা। নির্বাচন কমিশন তার সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছে। তবে জামায়াত ’৭১-এ যে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধ করেছে, তার জন্য তাকে নিষিদ্ধ করা ছাড়া বিকল্প নেই।

‘স্বাধীনতাবিরোধী’ জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংসদ সদস্য সানজিদা খানম বলেন, এখানেই থেমে গেলে চলবে না। জামায়াতের রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আসন্ন নির্বাচনে তারা ষড়যন্ত্র করতে পারে। নানাভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করবে। তাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে সজাগ থাকতে হবে।

জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা বলেন, দেশ স্বাধীনের ৪৭ বছর পর আমাদের জন্মযুদ্ধের বিরোধিতাকারী যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার জন্য কথা বলতে হবে এটা আমরা ভাবিনি। ভিয়েতনামে আইন করে তাদের দেশের যুদ্ধাপরাধী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাদের বংশধররা কেউ সরকারি চাকরি করতে পারে না। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব, যাতে আইন করে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং তাদের বংশধরদের নাগরিক সুবিধা সংকুচিত করা হয়।

জাতীয় সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের সভাপতি রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির জনক ৩৭ হাজার রাজাকারের তালিকা করেছিলেন। আমরা সেই তালিকা এখন দেখতে চাই। যাতে তাদের চিহ্নিত করে তাদের পারিবারিক সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের অধীনে বাজেয়াপ্ত করা যায়।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি ঝুনা চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাপ্পাদিত্য বসু, গৌরব-৭১-এর উপদেষ্টা কুহেলী কুদ্দুস মুক্তিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী।

পরে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় একটি আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শাহবাগ মোড় প্রদক্ষিণ করে জাদুঘরের সামনে এসে শেষ হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর