শিরোনাম
শুক্রবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সাফল্য বাড়ছে চট্টগ্রাম বন্দরের

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

সাফল্য বাড়ছে চট্টগ্রাম বন্দরের

সময়ের সঙ্গে দ্রুতগতিতে বাড়ছে দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যের চাহিদা। বাড়ছে রপ্তানি পণ্যের পরিমাণও। আর সেই চাহিদার সঙ্গে বাড়ছে দেশের ৯২ শতাংশ পণ্য আমদানি-রপ্তানির কেন্দ্রস্থল চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডেলিংও। প্রতিষ্ঠার ১৩১ বছরের মধ্যে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সর্বোচ্চ যন্ত্রপাতি যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। ওই অর্থবছরে ৬৩৫ কোটি টাকায় সর্বোচ্চ ৪৫টি যন্ত্রপাতি কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরে ইতিমধ্যে ছয়টি কি গ্যান্ট্রিক্রেন, রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রিক্রেন, রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রিক্রেন, স্ট্রাডল ক্যারিয়ার, কনটেইনার মুভার, লক হ্যান্ডলার, টেলি হ্যান্ডলার ও আরএমজির মতো প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ৮০ শতাংশ যুক্ত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এসব যন্ত্রপাতি বন্দরবহরে যুক্ত হওয়ায় অপারেশনাল কাজে এসেছে আমূল পরিবর্তন। এর ফলে কমেছে জাহাজের গড় অপেক্ষমাণ সময়, অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দর প্রতিষ্ঠার ১৩১ বছর পেরিয়ে গেলেও এতদিন এর বহরে ছিল না রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রিক্রেন। এবারই প্রথম ২২ কোটি টাকা দিয়ে প্রয়োজনীয় এই ইক্যুইপমেন্ট কিনেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত ৪ এপ্রিল এটি বন্দরের বহরে যুক্ত হয়। অত্যাধুনিক এ সরঞ্জাম দিয়ে ঘণ্টায় ২০ থেকে ২২টি কনটেইনার ওঠানো যাবে আইসিডিগামী রেলে। এতদিন চারটি কী গ্যান্ট্রিক্রেন দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কাজ চললেও এবার একসঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নতুন আরও ছয়টি কি গ্যান্ট্রিক্রেন। বন্দরের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিগত বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছর বেশি কনটেইনার হ্যান্ডেলিং হয়েছে। সবচেয়ে বেশি হ্যান্ডেলিং হয়েছে মার্চ মাসে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৩২৪ একক কনটেইনার। বন্দর ব্যবহারকারীদের সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, ‘চাহিদার কারণে ব্যবসায়ীরা দিন দিন তাদের পণ্য আমদানির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এতে বাড়ছে বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডেলিংও। এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে বন্দর যে প্রকল্পগুলো (পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, বে টার্মিনাল) নিয়েছে তা যথাসময়ে শেষ করতে হবে। অন্যথায় বাধার মুখে পড়বে বন্দরের গতি তথা দেশের আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম।’ বন্দরে গত এক দশকে আসা যন্ত্রপাতির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরেই সর্বোচ্চ সংখ্যক ভারী যন্ত্রপাতি এসেছে বন্দরে। এবার ৬৩৫ কোটি টাকায় কি গ্যান্ট্রিক্রেন, রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রিক্রেন, রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রিক্রেনসহ ৪৫টি ভারী যন্ত্রপাতি কিনেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এসেছিল ১২৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ২৭টি যন্ত্রপাতি। অথচ কয়েক বছর আগে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বন্দরে কোনো যন্ত্রপাতিই কেনা যায়নি। এ প্রসঙ্গে পোর্ট ইউজার্স ফোরামের চেয়ারম্যান চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, ‘প্রতি বছর গড়ে ১৬ শতাংশ হারে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনারের প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। কার্গো পণ্যও বাড়ছে প্রায় একই হারে। ক্রমবর্ধমান এ বাণিজ্য সামাল দিতে হলে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের কোনো বিকল্প নেই।’

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘৬৩৫ কোটি টাকায় সর্বোচ্চ ৪৫টি যন্ত্রপাতির মধ্যে অধিকাংশই কেনা হয়ে গেছে। গ্যান্ট্রিক্রেন ছাড়াও শিগগিরই আনা হবে স্ট্রাডল ক্যারিয়ার, কনটেইনার মুভার হারবার ক্রেন, ছয়টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রিক্রেন ও তিনটি স্ট্রাডল ক্যারিয়ার। এসব যন্ত্রপাতি যুক্ত হলে সামগ্রিক অর্থে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর