বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মোমেনের হাতে কোটি টাকা ইনাম চলেন বাড়ি ভাড়ায়

ঋণে ঋণে জর্জরিত খন্দকার মুক্তাদির

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

মোমেনের হাতে কোটি টাকা ইনাম চলেন বাড়ি ভাড়ায়

সিলেট-১ আসনে এবার আওয়ামী লীগ থেকে লড়ছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। নির্বাচন কমিশন তিনজনের মনোনয়নপত্রই বৈধ বলে ঘোষণা করেছে। এ নেতারা কমিশনে যে হলফনামা দাখিল করেছেন, তাতে দেখা গেছে, ড. মোমেনের হাতে বর্তমানে নগদ আছে ১ কোটি টাকারও বেশি। অন্যদিকে বাড়িভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থকে আয় দেখিয়েছেন ইনাম আহমদ চৌধুরী। আর খন্দকার মুক্তাদিরের নামে আছে বিপুল অঙ্কের ঋণ।

সিলেট-১ আসনের বর্তমান এমপি ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোটভাই ড. মোমেন নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামার সঙ্গে নিজের সহায়-সম্পত্তির সব তথ্য দিয়েছেন। সে হিসেবে মোমেনের হাতে নগদ আছে ১ কোটি ৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া ১৯৪৬.৬৩ ইউএস ডলারও রয়েছে তার কাছে। পিএইচডি করা মোমেন ‘শিক্ষকতা ও অন্যান্য’ পেশায় জড়িত। তার বিরুদ্ধে মামলা নেই। ড. মোমেনের আয়ের বিভিন্ন খাত রয়েছে। বাড়ি, দোকান বা অন্যান্য খাত থেকে ভাড়া বাবদ ৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ৩৮ হাজার টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক আমানত থেকে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, পেশা থেকে ২৭ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে তিনি ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। হলফনামা অনুসারে, এলএলবি পাস ইনাম আহমদ চৌধুরীর আয়ের উৎস ‘বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট বা দোকান থেকে প্রাপ্ত ভাড়া’। তার বিরুদ্ধে মামলা নেই। তিনি সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করে সমাজকল্যাণমূলক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট বা দোকান ভাড়া থেকে তিনি বছরে ৫ লাখ ৪১ হাজার টাকা আয় করেন। তার নামে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক আমানত আছে ২৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকার। ইনাম চৌধুরীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে নগদ ১১ লাখ টাকা এবং ১৪ হাজার ৯২০ ইউএস ডলার রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৬৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর কাছে নগদ ১৫ লাখ টাকা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা। হলফনামা অনুসারে বিএনপি নেতা খন্দকার মুক্তাদির ঋণে ডুবে আছেন। তার নামে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকার একক ঋণ আছে। তিনি ট্রাস্ট ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লি.— এই ছয়টি প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যান, এমডি বা পরিচালক পদে আছেন। এসব পদে থেকে তার নামে ট্রাস্ট ব্যাংকে ১৭২ কোটি ৩৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, এক্সিম ব্যাংকে ৪৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ব্র্যাংক ব্যাংকে ৯ কোটি ৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা, আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ৮৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানে ৫ কোটি এবং ইউনিয়ন ক্যাপিটালে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ২৩ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে।

 মুক্তাদিরের নামে বিপুল অঙ্কের দায়ও রয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানে তার দায় ৮ কোটি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, এক্সিম ব্যাংকে ৮৭ লাখ টাকা, সিটি ব্যাংকে প্রায় ১৮ লাখ টাকা। এমএসসি পাস মুক্তাদিরের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা আদালতে বিচারাধীন।

সর্বশেষ খবর