বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পেশায় তারা ব্যবসায়ী, নেই কোনো আয়

চট্টগ্রাম

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

পেশায় তারা সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। দেশজুড়েই রয়েছে ব্যবসায়ী হিসেবে তাদের নামডাক। কিন্তু এ খাত থেকে বার্ষিক আয় নেই তাদের। বিনা লাভেই বছরের পর বছর ধরে তারা ব্যবসা করে যাচ্ছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের হেভিওয়েট কয়েকজন প্রার্থীর জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে চমকপ্রদ এ তথ্য পাওয়া গেছে। আর যারা পেশা হিসেবে ব্যবসায়ী লিখেছেন, তারাও খুবই সামান্য আয় করেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। চট্টগ্রাম-১১  আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী পেশা ব্যবসা লিখলেও তার জমা দেওয়া হলফনামায় এ খাত থেকে কোনো আয় করেন না বলে উল্লেখ করেন। তবে তিনি কৃষি খাত থেকে ২৭ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৯৫ টাকা, শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র থেকে ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ৮২ টাকাসহ বার্ষিক ৭৩ লাখ ৬৫ হাজার ২১৯ টাকা আয় করার কথা উল্লেখ করেন হলফনামায়। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জমা দেওয়া হলফনামায় বাড়ি ভাড়া থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার এবং পেশা থেকে ১২ লাখ টাকাসহ বার্ষিক ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় করার কথা উল্লেখ করেন। চট্টগ্রাম-৮ আসনে মনোনয়ন বাতিল হওয়া বিএনপির প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী এম মোরশেদ খান পেশা ব্যবসা লিখলেও হলফনামায় ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় নেই বলে উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি কৃষি খাত থেকে বার্ষিক ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে ৯২ লাখ ৩৯ হাজার ৭৬ টাকা, শেয়ার থেকে ১২ লাখ ২৪ হাজার ১৭৫ টাকা, অন্যান্য খাত থেকে ২৭ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৬ টাকাসহ বার্ষিক ১ কোটি ৩৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৭ টাকা আয় করেন বলে উল্লেখ করেন। চট্টগ্রাম-৮ আসনের টানা দুইবারের নির্বাচিত এমপি জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইনউদ্দীন খান বাদল পেশা ব্যবসা ও সংসদ সদস্য লিখলেও জমা দেওয়া হলফনামায় বার্ষিক আয়ের উেস ব্যবসা থেকে কোনো আয় উল্লেখ করেননি। তিনি হলফনামায় পেশা থেকে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা, সংসদ সদস্য হিসেবে পারিতোষিক ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে অন্যান্য ভাতাদি থেকে ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৩৯০ টাকাসহ মোট ২৮ লাখ ১১ হাজার ৩৯০ টাকা বার্ষিক আয় করার কথা উল্লেখ করেন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কৃষি খাত, ব্যবসা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র থেকে আয় করার কথা হলফনামায় উল্লেখ করলেও এবার তা উল্লেখ করেননি। চট্টগ্রাম-১৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ হলফনামায় পেশা উল্লেখ করেছেন ব্যবসা।

কিন্তু এ ব্যবসা থেকে আয় দেখিয়েছেন তিনি নামমাত্র। হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন মাত্র ৭৮ হাজার ৫৫২ টাকা। এ হিসাবে ব্যবসায় মাসিক আয় দাঁড়ায় মাত্র ৬ হাজার ৫৪৬ টাকা। কৃষি খাত, বাড়ি ও দোকান ভাড়া, সম্মানী, ব্যবসা ও অন্যান্য আয় মিলিয়ে জাবেদের বার্ষিক আয় ৪৮ লাখ ৮১ হাজার ৮৫৫ টাকা। চট্টগ্রাম-১১ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগ নেতা এম আবদুল লতিফ হলফনামায় উল্লেখ করেন ব্যবসা, সম্মানী ভাতা ও গাড়ি বিক্রি থেকে তিনি বার্ষিক আয় করেন ৮২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৯০ টাকা, যার মধ্যে ব্যবসা থেকে তার আয় ৫৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৪ টাকা, সম্মানী ভাতা ২৫ লাখ ২৪ হাজার ৯২৬ টাকা এবং গাড়ি বিক্রি থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছিলেন, বার্ষিক আয় ১ কোটি ৭ লাখ ৯৮ হাজার ৪২৪ টাকা। গতবার ব্যবসা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত ও সম্মানী ভাতা থেকে আয়ের উৎস দেখানো হলেও এবার শেয়ার, সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক আমানত থেকে আয় ছিল না। তবে তিনি ব্যবসার বার্ষিক আয় উল্লেখ করলেও এ খাত থেকে বছরে ২১ লাখ ৬৬ হাজার ১৮৩ টাকা কমার কথা উল্লেখ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর