মঙ্গলবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিলেট

মনোনয়ন পেল না দুই যুদ্ধাপরাধী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে একটিতেও এবার জামায়াতের কোনো নেতাকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি। বিশেষ করে সিলেটের ছয়টি আসনের মধ্যে দুটিতে প্রার্থী হতে জোর তৎপরতায় ছিল জামায়াত। কিন্তু এ দুই আসনে প্রার্থী হতে চাওয়া দুই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থাকায় তাদের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ আসনে ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। আর সিলেট-৬ আসনে লড়তে চেয়েছিলেন সিলেট জেলা দক্ষিণ জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান। ধানের শীষ প্রতীকে প্রাথমিক মনোনয়নও পেয়েছিলেন  তারা। এ দুটি আসন বাগিয়ে নিতে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ব্যাপক তৎপর ছিল জামায়াত। একপর্যায়ে বিএনপিও আসন দুটি জামায়াতকে ছেড়ে দিতে সায় দেয় বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরোধিতায় আর ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের ফলে জামায়াতকে আসন দুটিতে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া থেকে পিছু হটে বিএনপি। সিলেট বিএনপির এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জামায়াতের ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থাকায় বিএনপি ধানের শীষ প্রতীকে তাদেরকে মনোনয়ন দেয়নি। এমনিতেই জামায়াত সঙ্গে থাকায় বিএনপিকে অনেক কথা শুনতে হয়। এখন সরাসরি যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত এমন কাউকে তো আর প্রার্থী করা যায় না।’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১০ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিহ্নিত ৪০ যুদ্ধাপরাধীর ছবিযুক্ত নামের তালিকা বিভিন্ন দূতাবাসে পাঠায়। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের সব বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে একই তালিকা পাঠায়, যাতে তারা পালিয়ে যেতে না পারেন। তৎকালীন সময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছিলেন ওই সময়কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ওই তালিকায় নাম ছিল সিলেটে জামায়াতের দুই নেতা মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী এবং মাওলানা হাবিবুর রহমানের। এ বিষয়ে ওই বছরের ১২ জুলাই দেশের জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বিশদ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। জানা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড সিলেট-৫ ও সিলেট-৬ আসন দুটি জামায়াতকে ছেড়ে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়ার আগে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে জামায়াতের ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়। এরপরই মত পাল্টে ফেলেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। জামায়াতের বদলে আসন দুটিতে বিএনপি ও জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ দলের নেতাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সিলেট-৫ আসনে জমিয়তে উলামায়ের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক এবং সিলেট-৬ আসনে জেলা বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর