মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিলেটে দলীয় প্রতিপক্ষের বাড়িতে ছাত্রলীগের হামলা

কুমিল্লায় ভোটকেন্দ্রে গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে নিজদলীয় প্রতিপক্ষের ঘরবাড়িতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিলেট-৩ আসনে পুনরায় নির্বাচিত আওয়ামী লীগের এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসের অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। হামলার শিকার হয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিবের অনুসারীরা। সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন তিনি। তবে মনোনয়ন না পাওয়া এ নেতা পরবর্তীতে নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন না। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম আহমদ শাহ জানান, গতকাল সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সিলেট-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও ইউনিয়নের শরীফগঞ্জে তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। একই ভাবে তার মামা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ভিপি এ বি এম কিবরিয়া ময়নুল হকের কায়স্থ গ্রামের বাড়িতে এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশফাকুল ইসলাম সাব্বিরের মোগলপুরের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, হামলায় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজান আহমদ শাহ  নেতৃত্ব                 দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে কয়েকটি মোটরসাইকেলে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী হামলায় অংশ নেয়। এ ছাড়া গত রবিবার দিবাগত রাত ১১টায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবেলের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম আহমদ শাহ। বাবেল বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি এ বি এম কিবরিয়া ময়নুল হক বলেন, ‘মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর অনুসারীরা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার ভাই ও স্ত্রীকে মারধর করেছে। ঘরে থাকা সোনা, নগদ ১৮ হাজার টাকা লুট করেছে। আমার ছোট ভাইয়ের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে।’ এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজান আহমদ শাহ হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। তবে যখন হামলা হয়, তখন তিনি বাড়িতে না থাকায় কাউকে চিনতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি আবুল বাশার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, ‘এটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যারা হামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন, তারা কারা হামলা করেছে তা বলতে পারেননি।’ এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার বরুড়ায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সাখাওয়াত হোসেন (২১)-এর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রবিবার ভোরে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আড্ডা ডিগ্রি কলেজ ভোট কেন্দ্রে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হন। ঢামেক সূত্র জানায়, সাখাওয়াত এলাকায় কৃষিকাজ করতেন। ওই ভোট কেন্দ্রের পাশেই তার বাড়ি। রাতে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয় কেন্দ্রে আগুন লেগেছে। এই ঘোষণা শুনে গ্রামের লোকজন আগুন নেভানোর জন্য কেন্দ্রে গেলে তখন পুলিশ গুলি চালালে তিনিসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ ঢামেক হাসপাতালে আরও চারজন চিকিৎসাধীন। তারা হলেন- কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার চন্দ্রশেখর গ্রামের আতাউর রহমান (৪৮), নারায়ণগঞ্জ সদরের দাসিরদিয়া গ্রামের শাহ আলম (৩০), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার জগৎশায় গ্রামের রাসেল (২৬), মুন্সীগঞ্জ সদর আটপাড়া গ্রামের শাহাবুদ্দিন (৬৬)।

সর্বশেষ খবর