বুধবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধতা নিরসনসহ ৮৮২ কোটি টাকার প্রকল্প চট্টগ্রামে

দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ মেয়রের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নতুন বছরে ৪ হাজার ৮৮১ কোটি ৯৯ লাখ টাকার সাত উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েছে। জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন, সড়ক উন্নয়ন-সম্প্রসারণসহ নানা উন্নয়ন প্রকল্পে ইতিমধ্যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রকল্প চলতি বছর শেষ হবে। বাকি প্রকল্পগুলো আগামী বছর সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। এসব প্রকল্প শতভাগ বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী নতুন একটি চট্টগ্রাম পাবে বলে মনে করছে চসিক কর্তৃপক্ষ। চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে তাগাদা দিয়েছেন চসিক মেয়র। এ নিয়ে গত সোমবার চসিকের সম্মেলন কক্ষে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের যত দ্রুত সম্ভব অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন খাল খনন এবং যানজট নিরসনে ট্রাক-বাস টার্মিনাল নির্মাণে উদ্যোগ নিতে বলা হয়। চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘নগর উন্নয়নে আমরা নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে অগ্রাধিবার ভিত্তিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন খাল খনন এবং যানজট নিরসনে টার্মিনাল নির্মাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি। এ দুটি প্রকল্পের টাকা একনেকে অনুমোদনও হয়েছে। বাকি উন্নয়ন প্রকল্পও দ্রুত সম্পন্ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’ চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে        চার হাজার ৮৮১ কোটি ৯৯ লাখ টাকার গুরুত্বপূর্ণ সাতটি বড় প্রকল্পের কাজ চলমান। এর মধ্যে একটি প্রকল্পের কাজ চলতি বছর এবং বাকিগুলোর কাজ আগামী বছরের জুনে শেষ হবে। সবগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী নতুন এক চট্টগ্রাম পাবে বলে আমরা মনে করছি।’ প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর ‘বারৈইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী’ পর্যন্ত নতুন খাল খননে এক হাজার ২৫৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা একনেক সভায় অনুমোদন দেয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন প্রকল্পটি অগ্রাধিকার দিচ্ছে চসিক। একই সঙ্গে নগরের যানজট নিরসনে ‘চসিক বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাস-ট্রাক নির্মাণ’ প্রকল্পের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয় এক হাজার ২২৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। তাছাড়া ‘চসিক আওতাধীন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাস নির্মাণ’ প্রকল্পের জন্য ২৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা, সোলার স্ট্রিট লাইটিং প্রোগ্রাম ইন সিটি করপোরেশন’ প্রকল্পের জন্য ২৭ কোটি ২ লাখ ১৯ হাজার টাকা এবং জাইকার অর্থায়নে সিটি গভার্নমেন্ট প্রজেক্ট’ এর আওতায় এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আগামী ২০২০ সালের ৩১ জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। অপরদিকে, ‘চসিক আওতাধীন বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাসমূহের উন্নয়ন এবং নালা, প্রতিরোধ দেওয়াল, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ-পুনর্নির্মাণ’ প্রকল্পের জন্য ৭১৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা অনুমোদন দেয় একনেক। এটি চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। জানা যায়, নতুন খালটি নগরের বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া চাক্তাই খাল থেকে শুরু করে শাহ্ আমানত সড়ক হয়ে নুরনগর হাউজিং সোসাইটির মাইজপাড়া দিয়ে পূর্ব বাকলিয়া হয়ে বলীর হাটের পাশে কর্ণফুলী নদীতে পড়বে। খালের দৈর্ঘ্য হবে ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ৬৫ ফুট। খালটির মাটি উত্তোলন, সংস্কার ও নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে খালের উভয় পাশে ২০ ফুট প্রশস্ত ২টি সড়ক নির্মিত হবে।

অন্যদিকে, নগরীর কুলগাঁও বালুছড়া এলাকায় ১৬ একর জায়গায় নির্মিত হবে বাস-ট্রাক টার্মিনাল। এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬০ কোটি ৫ লাখ ৫ হাজার টাকা। জমির উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা এবং টার্মিনালের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বর্তমানে এটির ভূমি অধিগ্রহণ কাজ চলছে।

সর্বশেষ খবর