বুধবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে আনন্দের বন্যা, আছে উৎকণ্ঠাও

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম

নতুন মন্ত্রিসভায় প্রাপ্তির আনন্দবন্যার সঙ্গে মাঠের রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুগপৎ উৎকণ্ঠা এখন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে। নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পরই মন্ত্রিসভার চমকে চট্টগ্রামের হিস্যা ও নগর-জেলার রাজনীতিতে ভবিষ্যৎ গন্তব্য নিয়ে ভাবছেন কর্মীরা। এ দুইয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যুক্ত হয়েছে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আকাক্সক্ষার ঘোড়দৌড়! স্বাপ্নিক উত্তেজনার এই ত্রিবেণী মোহনায় দাঁড়িয়ে নতুন যাত্রার পথে এখন চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ। এতে ঘুম হারাম যেন অনেক শীর্ষ নেতার। বিপুল বিজয়ের উচ্ছ্বাসের প্লাবনেই কর্মী-সমর্থকদের আছে সীমাহীন প্রত্যাশাও। তবে অনেক প্রশ্নও আছে তাদের মনে। মন্ত্রীর মুকুট প্রাপ্তির প্রভাব দলে পড়ছে কি? মহানগর ও জেলাজুড়ে সাংগঠনিক নিয়ন্ত্রণের নাটাই যাচ্ছে কি নতুন কারও হাতে? নাকি মন্ত্রীর মর্যাদা না পাওয়া শীর্ষ নেতারাই দলে আরও প্রভাবশালী হচ্ছেন? এসব প্রশ্নের পরও নতুন মন্ত্রিসভায় চমকের বন্যায় আপ্লুত সমর্থকরা। নতুন মন্ত্রিসভায় উত্তর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার এমপি ড. হাছান মাহমুদ স্বাধীনতার পর এই প্রথম চট্টগ্রাম থেকে তথ্যমন্ত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হলেন। সাবেক মন্ত্রী হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতার প্রশাসন ও রাজনীতি দুই ধারাতেই অম্লমধুর  অভিজ্ঞতা আছে। দলের দুর্দিনের এই মুখপাত্রের হ্যাটট্রিক এমপি হিসেবে যেমন নিজ এলাকায়, তেমনি উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর চট্টগ্রামের রাজনীতিতেও নিজস্ব বলয় আছে। হালজমানার সুসময়ে নয়, নব্বইয়ের দশকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে সংগ্রামে, ওয়ান-ইলেভেনের দুঃসময়ে, কিংবা তারও আগে বিএনপি-জামায়াতের অশুভ শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে রক্ত ঝরে তার। প্রথমবার তিনি এমপি হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে আদালত কর্তৃক ফাঁসির রায়ে মৃত্যু কার্যকর হওয়া বহুল আলোচিত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীকে হারিয়ে।

অন্যদিকে দক্ষিণ চট্টগ্রামেও স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতোই সদ্য সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী  সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ হলেন পূর্ণ মন্ত্রী। চিটাগাং চেম্বারের সাবেক এই সভাপতি মরহুম জননেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে। ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্যও। দক্ষিণ চট্টগ্রামে রয়েছে তার নিজস্ব অবস্থান। এদিকে প্রথমবার এমপি হয়েই শিক্ষা উপমন্ত্রী হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক মেয়র মরহুম জননেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তরুণ নেতা নওফেল কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। পারিবারিক পরিবেশেই রাজনৈতিক দীক্ষা তার। এই তিন নেতার প্রাপ্তিতে আনন্দবন্যার পাশাপাশি সরকার ও দলের দায়িত্বশীলদের মধ্যে মর্যাদাগত সাম্য রক্ষায় মহানগরে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও জেলার সবচেয়ে প্রবীণ নেতা সদ্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ মহাজোটের শরিক শীর্ষ নেতাদের প্রাপ্তির বিষয়ে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের দিকেই চেয়ে আছেন কর্মী-সমর্থকরা।

জিইয়ে আছে সাবেক মন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরী, মরহুম জননেতা এম এ আজিজ এবং এম এ মান্নানসহ ত্যাগী নেতাদের উত্তরাধিকার হিস্যাও।

সর্বশেষ খবর