শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

অবিলম্বে চাকসু নির্বাচন চায় ছাত্র সংগঠনগুলো

বাইজিদ ইমন, চবি

১৯৬৬ সালে ১ হাজার ৭৫৩ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠা করা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (চাকসু) অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র ছয়বার। যেখানে ৫২ বছরে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ৫২ বার, সেখানে ২৮ বছর ধরে অধরা চাকসু নির্বাচন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চার বছরের মাথায় ১৯৭০ সালে সর্বপ্রথম চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ভিপি নির্বাচিত হন শহীদ আবদুর রব ও জিএস মোহাম্মদ ইব্রাহিম। ১৯৭২ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনে ভিপি হন শামসুজ্জামান হীরা ও জিএস মাহমুদুর রহমান মান্না। ১৯৭৪ সালের তৃতীয় নির্বাচনে ভিপি হন এস এম ফজলুল হক ও জিএস গোলাম জিলানী চৌধুরী। ১৯৭৯ সালের চতুর্থ নির্বাচনে ভিপি হন মাজহারুল শাহ চৌধুরী ও জিএস জমির চৌধুরী। ১৯৮১ সালের পঞ্চম নির্বাচনে ভিপি হন জসিম উদ্দিন সরকার ও জিএস আবদুল গাফফার এবং সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভিপি নির্বাচিত হন নাজিম উদ্দিন ও জিএস আজিম উদ্দিন। এরপর থেকে দীর্ঘ ২৮ বছরে আর কোনো নির্বাচন না হওয়ায় এখনো নাজিম উদ্দিন চাকসুর ভিপি হিসেবে পরিচিত।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, ১৯৭৩-এর ২২ ধারা অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ সদস্যবিশিষ্ট সিনেটে পদাধিকারবলে পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি থাকবে। নির্বাচন না হওয়ায় গত ২৮ বছর সিনেটে শিক্ষার্থীদের কোনো প্রতিনিধি নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হচ্ছেন। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাপিয়ে দেওয়া নিয়মনীতি মাথা পেতে নিতে হচ্ছে। এমনকি সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়েছে বলেও মনে করেন অনেকে। এই ছাত্র সংসদের মাধ্যমেই ছাত্রছাত্রীরা তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ে সোচ্চার ছিলেন বলে মন্তব্য করেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চাকসু নির্বাচন না হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের মত প্রকাশে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বেশ কয়েকবার স্মারকলিপি প্রদান করেছি। তাতেও কোনো সম্ভাবনা দেখিনি।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সহাবস্থান তৈরির জন্য চাকসু নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।’

চাকসু নির্বাচন চায় না এমন কোনো শিক্ষার্থী আছেন বলে মনে হয় না। চাকসু নির্বাচন না থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি প্রদীপ চাকমা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্র সংসদ একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এটি সবার সমন্বিত প্রয়াসে সম্পন্ন করা সম্ভব। সবাই এগিয়ে এলে আমরা চাকসু নির্বাচন দিতে শতভাগ প্রস্তুত।’

সর্বশেষ খবর