শনিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
বরিশালে তোলপাড়

সংখ্যালঘু নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত সেই যুবদল নেতা আওয়ামী লীগে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

২০০১ সালের ১ অক্টোবরের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের রাজারচর গ্রামে এক সংখ্যালঘু পরিবারের ৩ নারীকে পাশবিক নির্যাতনকারী যুবদল নেতার আওয়ামী লীগে যোগদান নিয়ে তোলপাড় চলছে। ওই ঘটনায় ইউনিয়ন যুবদলের তৎকালীন সভাপতি বজলু হাওলাদারকে প্রধান এবং ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুস ছালাম রাঢ়িকে হুকুমের আসামি করে মামলা দায়ের করা হলেও প্রভাবশালীদের চাপের মুখে ধামাচাপা পড়ে যায় মামলাটি। কিন্তু ঘটনার প্রায় দেড় যুগ পর একাদশ সংসদ নির্বাচনের কয়েক দিন আগে ওই ইউনিয়নের বুখাইনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এক নির্বাচনী সমাবেশে সাবেক যুবদল নেতা বজলু হাওলাদার যোগ দেন আওয়ামী লীগে। চরমোনাই এলাকার বিভিন্ন সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরই বজলু হাওলাদার আওয়ামী লীগে যোগদানের জন্য সখ্য গড়ে তোলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মির্জা আনোয়ার হোসেন ফনি ও বর্তমান আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম মাস্টারের সঙ্গে। সে অনুযায়ী ২২ ডিসেম্বর নির্বাচনী সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম ছবি ও সাধারণ সম্পাদক হালিম রেজা মোফাজ্জেলসহ অন্য নেতাদের হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন বজলু হাওলাদার। সম্প্রতি এ বিষয়টি দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীর নজরে এলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মনিরুল ইসলাম ছবি বলেন, বজলু হাওলাদারকে তিনি চেনেন না। ইউনিয়ন নেতারা তাকে দলে যোগদান করিয়েছেন।

 চরমোনাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন ফনি বলেন, নির্বাচনের সময় ৫ নম্বর  ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কর্মীদের মন রক্ষার জন্য বজলুকে যোগদান করানো হয়েছিল। তার মতে, ‘গা বাঁচাতে’ বজলু দলে ঢুকে পড়েছেন। কিন্তু তিনি যেহেতু ঘৃণ্য অপরাধী সে কারণে শেষ পর্যন্ত দলে তার ঠাঁই হবে না।

 ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম মাস্টার স্বীকার করেন, বজলু ২০০১ সালের নির্বাচনের পর জঘন্য অপরাধ করেছিল। আওয়ামী লীগে তাকে কোনো পদ-পদবি দেওয়া হবে না।  জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি বরিশাল-৫ (সদর) আসনের এমপি ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, আওয়ামী লীগে কোনো অপরাধীর ঠাঁই হবে না। এদিকে সাবেক যুবদল নেতা বজলু হাওলাদারের দাবি, তিনি আদালতের মাধ্যমে মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। তবে মামলার বাদী দিনমজুর পবিত্র মিস্ত্রি অভিযোগ করেছেন, মামলা দায়েরের পর বজলু সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জোর করে সাদা স্ট্যাম্পে তার (পবিত্র) স্বাক্ষর নিয়েছিল। এই স্ট্যাম্প ব্যবহার করে বজলু আদালতের মাধ্যমে মামলা তুলে নেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর