সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

উচ্চ সুদের ঋণ বিদ্যুৎ খাতে কখনো বিনিয়োগ হবে না

---------- বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি বলেছেন, আগামী ৫০ বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চায় সরকার। এজন্য যে পরিমাণ অর্থ লাগবে তা সরকারের একার পক্ষে বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়। এখন বিদ্যুৎ খাতে প্রয়োজন দেশি-বিদেশি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ। কিন্তু বাংলাদেশি কোনো ব্যাংক থেকে এত উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে কখনো বিনিয়োগ হবে না। কারণ ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ সুদের ঋণ দিয়ে কোনো ব্যবসা সফল হবে না। গতকাল গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন- এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য : গতিশীল প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিদ্যুতের সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে ওই সংলাপে সূচনা বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড- বিপিডিবি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার খালেদ মাহমুদ, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড-বিআরইবি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব.) এবং টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- স্রেডা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, এফবিসিসিআইর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, সহসভাপতি মুনতাকিম আশরাফ, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশিদ, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন প্রমুখ।

 ওই সংলাপে উচ্চ সুদহার নিয়ে ব্যবসায়ীদের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, খেলাপি ঋণ ও সুদহার শিগগিরই কমবে। সুদহার কমানোর জন্য ইতিমধ্যে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। কারণ- প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি খাতে বেশি নজর দিয়েছেন। বর্তমানে আমাদের যে অভাবনীয় সাফল্য রয়েছে, তার থেকেও পরবর্তী পর্যায়ে যেতে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ প্রয়োজন। তার মতে, ভ্যাট আইন নিয়ে এখন আর ব্যবসায়ীদের কোনো আপত্তি নেই। এই সরকারের মেয়াদেই দুই অঙ্কের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে বলে মনে করেন তিনি। এর আগে এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন সুদহার নিয়ে কড়া সমালোচনা করে বলেন, যে দেশে তিন মাসের ব্যবধানে সুদহার ৯ শতাংশ থেকে ১৪ শতাংশ হয়, সে দেশে বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় পরিস্থিতির উন্নয়ন দরকার। দেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ পরিস্থিতির উন্নতি সাধনের ওপর জোর দেন তিনি। বিদ্যুৎ খাত সম্পর্কে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, মানসম্মত বিদ্যুতের অভাবে শিল্প-কারখানার উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেসরকারি খাত কঠিন সংগ্রাম করে ব্যবসা করছে। বিনিয়োগ প্রত্যাশিত মাত্রায় যেতে পারছে না। ঢাকার বাইরে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। তার মতে, দেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে পরবর্তী ধাপে উন্নীত করতে বিদ্যুতের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে বিনিয়োগ পরিকল্পনা করা দরকার। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং ব্যাংক খাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দূর করাও জরুরি। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৫৬ শতাংশ বেসরকারি খাতে উৎপাদিত হচ্ছে। এই খাতে মোট ২১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ দরকার। সে হিসাবে প্রতিবছর প্রয়োজন ৯ বিলিয়ন ডলার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর