মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপেও যানজট কমছে না চট্টগ্রাম বন্দরে

ভয়াবহ দুর্ভোগে নগরবাসী

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক যানজটের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। বিশেষ করে আকাশপথ ব্যবহারকারীরা যখন চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে গমনাগমন করেন, তখন তাদের গড়ে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় অপচয় হয় এ জটের কারণে। সীমাহীন এ দুর্ভোগ নিরসনে গত জুনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশের আইজিকে আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মল্লিকা খাতুন। তার স্বাক্ষরিত এক বিশেষ প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট মহলগুলোকে বন্দরকেন্দ্রিক যানজট নিরসনের তাগিদ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি একাধিক পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (নিরাপত্তা) মেজর মো. রেজাউল হক। এই ভিআইপি রুটের যানজট নিরসন করতে ইতিমধ্যে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে ১৭ দফা সুপারিশ। তবে পুলিশ প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, তার বাস্তবায়নে ধীরগতি চলছে বলে মনে করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রামের আকাশপথ   ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে যারা প্রবাসী রয়েছেন তাদের কাছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবহারও বেড়ে চলেছে। কিন্তু এই বিমানবন্দর থেকে মূল শহরে প্রবেশ বা শহর থেকে বিমানবন্দরমুখী একজন যাত্রীকে গড়ে দেড় থেকে দুই ঘণ্টার যানজটজনিত দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক সময় বিমানের নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে না পেরে জটিলতায়ও পড়তে হয় যাত্রীদের। এ জটিলতা মূলত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকেন্দ্রিক পণ্য পরিবহনের চাপের কারণেই বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে প্রায়ই যানজটে স্থবির হয়ে থাকে নগরের বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে চট্টগ্রাম ইপিজেড ও কর্ণফুলী ইপিজেড পর্যন্ত এলাকাটি। এ যানজট নিরসনে গত ১৯ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হলে চট্টগ্রাম নগর ও ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে যানজটের কারণগুলো চিহ্নিত করা হয়।

কারণগুলো নিরসনে পুলিশের দেওয়া ১৭ দফা সুপারিশে বলা হয়- নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের ৩ নম্বর গেট বেলা ১১টার পরিবর্তে সকাল ৭টা থেকে খোলা রাখা, বন্দর থেকে মালবোঝাই ট্রাক বের হওয়ার জন্য নর্থ কনটেইনার ইয়ার্ডের পাশের রাস্তাটি উন্মুক্ত রাখা, ইছহাক ব্রাদার্স ডিপো থেকে পুরাতন মার্কেট এবং বন্দর কলেজের রাস্তাটি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের জন্য বরাদ্দ রাখা, বন্দর ভবনের সামনের গোলচত্বরটিকে কনটেইনার মোভার বাঁক নিতে পারার মতো উপযুক্ত করে পুনর্নির্মাণ, দ্রুততম সময়ের মধ্যে পোর্ট কানেকটিং রোড পুরোপুরি চালুর ব্যবস্থা গ্রহণ, বন্দরের প্রতিটি গেট অটোমেটেড করাসহ বন্দর পণ্য পরিবহনকারী গাড়িগুলোর জন্য পৃথক টার্মিনাল নির্মাণ। এসব পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম মহানগর বন্দরকেন্দ্রিক যানজটের কারণে অচল নগরে পরিণত হবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে পুলিশের এসব সুপারিশ প্রসঙ্গে বন্দরের সদস্য (নিরাপত্তা) মেজর মো. রেজাউল হক বলেন, ‘বন্দরকেন্দ্রিক যে যানজট হয় তা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে এর জন্য কেবল চট্টগ্রাম বন্দর একাই দায়ী হবে, তাও নয়। পুলিশ তাদের ১৭ দফা সুপারিশ দিয়েছে। এর আলোকে আমরা বেশকিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করেছি, যেগুলো এখনো চলমান রয়েছে; যেখানে অনেক পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদি।’

 

সর্বশেষ খবর