বৃহস্পতিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভূমি জটিলতা কাটছে চসিকের নতুন খাল খননে

মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের উদ্যোগ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নতুন খাল খনন প্রক্রিয়ার প্রধান সমস্যা ভূমি নিয়ে জটিলতা কাটার পথে। এ জটিলতা নিরসনে প্রকল্প এলাকার দুই ওয়ার্ডের ভূমি মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের ভূমি মালিক এবং গত মঙ্গলবার পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের ভূমি মালিকদের সঙ্গে চসিকের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের মাধ্যমে নতুন খালের ভূমি জটিলতা কাটছে বলে জানা যায়। চসিকের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন খাল খনন প্রকল্পে ভূমি জটিলতা ভর করে। তাই সমস্যা নিরসনে চসিক মেয়রের উদ্যোগে সরাসরি ভূমি মালিকদের সঙ্গে কথা বলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ নিয়ে ২৮ জানুয়ারি ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ও ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে চিঠি দেওয়া হয়। চসিকের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা এখলাস উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ড-সংশ্লিষ্ট খালের প্রায় ৩০০ ভূমি মালিকের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের তিন গুণ দাম দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আশা করছি, আর কোনো জটিলতা থাকবে না।’ চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৪ জুন ২৮৯ কোটি ৪৪ লাখ ৪ হাজার টাকার প্রকল্পটি একনেক অনুমোদন দেয়। ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮১ হাজার টাকায় প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন প্রকল্পের মেয়াদকাল ছিল ২০১৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ৩০ জুন।

প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ২২৪ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। তবে নির্ধারিত সময়ে ভূমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরু করা যায়নি। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পটি সংশোধন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠায় চসিক। সংশোধিত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৬১৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা। পরিকল্পনা কমিশনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকল্পটি পুনরায় সংশোধন করে ৩৭৬ কোটি ১৩ লাখ টাকায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। পরে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভার সিদ্ধান্তমতে আবারও সংশোধন করে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ২২৪ কোটি ১২ লাখ টাকা। জানা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বের সঙ্গে ভূমির মৌজা রেটও বেড়ে যায়। গত বছরের ১৪ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. মমিনুর রশিদ এক পত্রে চসিককে জানান, ‘বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত বিভিন্ন মৌজায় অধিগ্রহণে প্রস্তাবিত ২৫ দশমিক ১৬৬৬২ একর ভূমির সম্ভাব্য মূল্য ১ হাজার ১০৩ কোটি ৮৪ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৬ টাকা। প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালের মহাপরিকল্পনায় নগরে নতুন তিনটি খাল খননের প্রস্তাব করা হয়। পরে চসিক নগরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে। কমিটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খননের সুপারিশ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালে প্রকল্পটি গ্রহণ করে চসিক। নতুন খালটি নগরের বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে চাক্তাই খাল-শাহ্ আমানত সংযোগ সেতু রোড-নুরনগর হাউজিং সোসাইটির মাইজপাড়া-পূর্ব বাকলিয়া-বলির হাট হয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে মিশবে। খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার, প্রস্থ ৬৫ ফুট। খালটির মাটি উত্তোলন, সংস্কার ও নতুন যোগাযোগব্যবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে উভয় পাশে ২০ ফুট করে দুটি রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর