শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বদলি পদায়ন বন্ধ হচ্ছে খাদ্য অধিদফতরে

শিগগিরই নীতিমালা

নিজামুল হক বিপুল

খাদ্য অধিদফতরের অধীন মাঠপর্যায়ে জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক, পরিদর্শক, গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি-এলএসডি) বিভিন্ন পদায়ন ও বদলিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে নীতিমালা করতে যাচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয় গঠিত একটি কমিটি এই নীতিমালার একটা খসড়া তৈরির কাজ করছে। খুব শিগগিরই নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে। এই নীতিমালা হলে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নে সততা, অভিজ্ঞতা, কর্মদক্ষতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নীতিমালা তৈরির আগ পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে সব ধরনের বদলি ও পদায়ন বন্ধ থাকবে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদফতরের বিভিন্ন পদে বদলি ও পদায়নে বাণিজ্য একেবারেই ওপেন সিক্রেট। যার সঙ্গে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা জড়িত। এমনকি বিভিন্ন সময়ে এসব বদলি ও পদায়নে মন্ত্রীদের নামও জড়িয়ে ছিল। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে মাঠপর্যায়ে অর্থাৎ জেলা, উপজেলা এবং আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দফতর চেইন অব কমান্ড অনেকটা ভেঙে পড়েছিল। সূত্র জানায়, বিভিন্ন মন্ত্রী সরাসরি বদলি ও পদায়ন বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ায় সম্প্রতি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের লাগাম টেনে ধরা প্রায় অসাধ্য ছিল খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের পক্ষে।  দুর্নীতি-অনিয়মের এই লাগাম টেনে ধরতে এবং খাদ্য অধিদফতরের অধীন মাঠপর্যায়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নতুন করে উদ্যোগ নিচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সাধন চন্দ্র মজুমদার খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বদলি ও পদায়নে অনিয়ম বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, বদলি ও পদায়নে বাণিজ্য বন্ধে নীতিমালা তৈরির প্রতি জোর দিয়েছেন নতুন মন্ত্রী। সে লক্ষ্যেই একটি নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে।  খাদ্য অধিদফতরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নীতিমালা তৈরিতে মাসখানেক সময় লাগবে। আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই এটি চূড়ান্ত হতে পারে। তার আগ পর্যন্ত খাদ্য পরিদর্শক, জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক, গুদামের ভারপ্রাপ্ত  কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়ন বন্ধ থাকবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শুধু নীতিমালাই নয়, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র খাদ্য অধিদপ্তরের অধীন মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বিশেষ করে আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক ও জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকদের আমলনামাও তলব করেছেন। ইতিমধ্যে সেটি তৈরির কাজেও হাত দিয়েছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।  

নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আরিফুর রহমান অপু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, খাদ্যমন্ত্রী একটি নীতিমালার মধ্যে বদলি ও পদায়নের বিষয়টি নিয়ে আসার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। এটি শিগগিরই চূড়ান্ত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে করে বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি যেমন বন্ধ হবে, তেমনি সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা অগ্রাধিকার পাবেন বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে।

সর্বশেষ খবর