রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

মেয়র প্রার্থীর খবর নেই ব্যস্ত কাউন্সিলররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেয়র প্রার্থীর খবর নেই ব্যস্ত কাউন্সিলররা

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে একজন ছাড়া অন্য কারও প্রচার-প্রচারণায় তেমন খবর নেই। কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সবাই। উত্তর সিটির মেয়র পদের উপনির্বাচনে লড়ছেন ৫ জন মেয়র প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাপার প্রার্থীর পোস্টার দেখা গেলেও অন্য প্রার্থীদের কোনো খবর নেই। ভোটারদের মধ্যে ভোট নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। অনেকে জানেন না ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচনের ভোট কবে হবে। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। সেই সঙ্গে আলোচনা, মতবিনিয়ম, কর্মিসভা, লিফলেট বিতরণ, মাইকিংসহ নানা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।

উত্তরের মেয়র পদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম (নৌকা), জাতীয় পার্টির শাফিন আহমেদ (লাঙ্গল), এনপিপির আনিসুর রহমান দেওয়ান (আম), স্বতন্ত্র আবদুর রহিম (টেবিল ঘড়ি), পিডিপির শাহীন খান (বাঘ) প্রতীকে লড়ছেন।

সরেজমিন ঢাকার গুলশান, বনানী, বাড্ডা, মহাখালী, বারিধারা, ভাটারা এলাকা ঘুরে মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও শাফিন আহমেদের পোস্টার চোখে পড়েছে। বেশকিছু বাসের পেছনে দেখা গেছে শাফিন আহমেদের পোস্টার। মহাখালী এলাকায় পাওয়া গেছে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির (পিডিপি) প্রার্থী শাহীন খানের একটি প্রচার মাইক। গত শুক্রবার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহিম। তবে প্রায় সব এলাকায় কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানার, নির্বাচনী অফিস ও প্রচার মাইক চোখে পড়েছে। এদিকে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। গণসংযোগকালে তার সঙ্গে থাকছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। গতকাল বিশ্ব ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের খেজুর, কেক ও বিস্কুট খাইয়ে দোয়া চেয়েছেন আতিকুল ইসলাম।

উত্তর সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, মেয়র নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণায় না থাকলেও নতুন ১৮টি সাধারণ ও ৬টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ব্যাপক নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চলছে। গতকাল বিকালে উত্তর সিটির ৩৯, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মিছিল করতে দেখা গেছে। এছাড়া ওয়ার্ডে অলি-গলি রাজপথ পোস্টারে ছেয়ে গেছে। কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারে ঢেকে গেছে মেয়র প্রার্থীদের পোস্টার। অন্যদিকে দক্ষিণ সিটির নতুন ওয়ার্ডেও চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচন নিয়ে নতুন ওয়ার্ডগুলোয় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রথমবার ভোট হতে যাওয়া এসব এলাকার দোকান, অলি-গলি সর্বত্র পোস্টারে ছেয়ে গেছে। রাজধানীর বাড্ডা, মেরুল, বেরাইদ, সাঁতারকুল এলাকায় দেখা গেছে পাশাপাশি বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস। সেখানে মাইকে, সাউন্ড বক্সে সুরে সুরে বাজছে নির্বাচনী স্লোগান। কাউন্সিলর নির্বাচনে দলীয় সমর্থন না থাকায় এখানে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আশা করছেন ভোটাররা। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পরে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। অর্থাৎ ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা নাগাদ সবাই প্রচার চালাতে পারবেন। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন, উত্তর ও দক্ষিণের সম্প্রসারিত ৩৬টি সাধারণ ও ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন। সেই সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটির ৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারা যাওয়ায় এ দুটিতে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে একক প্রার্থী থাকায় এ ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হবে না। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম আজ সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। সকাল ১১টায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় এই মতবিনিময় অনুষ্ঠান হবে। আর তিনি বেলা ৩টায় ঢাকা উত্তরের কৃষক লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিমিয় করবেন কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে। এ ছাড়া মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে। এদিকে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শাফিন আহমেদের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে ঢাকা মহানগর উত্তরে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল এইচ এম এরশাদের বনানীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপত্তিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতী। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সেন্টু। জাতীয় পার্টির যুগ্ম-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম জয় জানান, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় পার্টির উত্তরের সব নেতা-কর্মী শাফিন আহমেদের পক্ষে জোরালো প্রচারণায় নামবে। এ জন্য নেতাদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর