সোমবার, ৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ময়লার ভাগাড় চাক্তাই খাল!

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

ময়লার ভাগাড় চাক্তাই খাল!

অতিরিক্ত মাত্রায় দূষণ ও দখলদারদের কবলে মৃতপ্রায় হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী চাক্তাই খাল। যে খালে একসময় সাম্পান-নৌকা চলতো অনায়াসে, সে খাল এখন পলিথিন ও প্লাস্টিকের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নগরীর ৬০ লাখ লোকের অধিকাংশের পয়ঃনিষ্কাশন ও ময়লা-আবর্জনার এক বিশাল ‘ডাস্টবিন’ যেন এই চাক্তাই খাল। খালের কোনো কোনো অংশ আবার চলে গেছে ভবনের তলায় কিংবা ঝুঁপড়ি দোকান-ঘরের আড়ালে দখলদারদের হাতে। অতীতে দখলরোধে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও দূষণরোধে কেউ কোনো কার্যক্রমে পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে চট্টগ্রাম নগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার অন্যতম ‘শিরা’ খ্যাত চাক্তাই খালকে দখল-দূষণমুক্ত করা না গেলে জলাবদ্ধতা ও দূষণের তীব্রতায় নগরীর অর্ধেকাংশ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে বলে মনে করেন সচেতন মহল। সেইসঙ্গে পলিথিন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং প্লাস্টিক ব্যবহার সীমিত করতে হবে বলেও জানান পরিবেশ আন্দোলনকারীরা। সরেজমিন দেখা যায়, চাক্তাই খালের কুচকুচে কালো পানি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কোথাও জমে আছে পলিথিন ও প্লাস্টিক মোড়কে মেশানো আবর্জনার বিশাল স্তূপ। গৃহস্থালির যত রকমের আবর্জনা আছে সবই এসে পড়ছে এই খালে। আবর্জনার চাপে কিছু কিছু জায়গায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। টোকাই শিশুদের কেউ কেউ এপাড় থেকে ওপাড়ে হেঁটে ওই আবর্জনার স্তূপ থেকে খুঁজে নিচ্ছে প্লাস্টিকের খালি বোতল, কৌটা এসব। প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে খাল খনন করা হলেও তার সুফল থাকছে অধরা। শুধু খালের ভিতর নয়, খালের সীমানা থেকে ১৫ ফুট জায়গা খালি থাকার কথা থাকলেও কোথাও তা নেই। পাড়ের বেশির ভাগই বেদখল হয়ে গেছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন চাক্তাই খালের অবৈধ দখলদারদের একটি তালিকা করেছে। এতে ৪৮ জন অবৈধ দখলদারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ওয়াসার জরিপেও চাক্তাই খাল দখল ও ভরাটের বিভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে।  চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী বলেন, ‘মানুষ যদি সচেতন না হয়, তাহলে কিছুতেই কিছু হবে না। উন্নত দেশে মানুষ নালা-খালে বর্জ্য ফেলে না। আমাদের এখানে মানুষ নির্বিচারে ফেলছে, দখল-ভরাট চলছে। তাই প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে খাল সংস্কার হলেও তার শতভাগ সুফল নগরবাসী পাচ্ছে না।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর