সোমবার, ৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফের বাড়ছে গ্যাসের দাম

১১ মার্চ থেকে গণশুনানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফের বাড়ছে গ্যাসের দাম

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির জন্য ফের তোড়জোড় শুরু করেছে সরকার। প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার ঘাটতি এবং ভবিষ্যতে গ্যাসের ঘাটতি পূরণ, পাশাপাশি আমদানিকৃত এলএনজির মূল্য সমন্বয় করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) সম্প্রতি একে একে আবেদন করে। সে অনুযায়ী এই তোড়জোড় শুরু হয়েছে। জানা গেছে, আগামী ১১ থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি অডিটরিয়ামে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ওপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বিইআরসির কর্মকর্তা, গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ছাড়াও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত থাকবেন।  সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুযায়ী বিদ্যুতের মূল্যহার শতকরা ১৪২ শতাংশ, সারে ১৫৮ শতাংশ, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ৬৩ শতাংশ, শিল্পে ৯৩ শতাংশ, চা-বাগানে ৭৩ শতাংশ, বাণিজ্যিকে ১৭ শতাংশ, সিএনজিতে ২৫ শতাংশ, গৃহস্থালির এক বার্নার গ্যাসের চুলায় ৩৩ শতাংশ এবং ডাবল বার্নার গ্যাসের চুলায় ৫০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে। আর মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের দাম ৩ টাকা ১৬ পয়সা থেকে ৭ টাকা ৬৬ পয়সা, সারের দাম ২ টাকা ৭১ পয়সা থেকে ৭ টাকা, ক্যাপটিভ পাওয়ারের দাম ৯ টাকা ৬২ পয়সা থেকে ১৫ টাকা ৭০ পয়সা, শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৭ টাকা ৭৬ পয়সা থেকে ১৫ টাকা, চা-বাগানের ক্ষেত্রে ৭ টাকা ৪২ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৮০ পয়সা, বাণিজ্যিকে ১৭ টাকা ০৪ পয়সা থেকে ২০ টাকা, সিএনজিতে ৩২ টাকা থেকে ৪০ টাকা, আর আবাসিকে এক বার্নার চুলা ৭৫০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং ডাবল বার্নার ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।  বিইআরসি সূত্রে জানা গেছে, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ওপর আগামী ১১ মার্চ সকালে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) এর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ১২ মার্চ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের গণশুনানি, ১৩ মার্চ বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ও জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের গণশুনানি হবে। শেষ দিনে ১৪ মার্চ কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বিইআরসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেশি দামে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির কারণে বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। কোম্পানিগুলো গড়ে ৬৬ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। তবে তিনি তখন এও জানান, এ দফায় আবাসিকে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়বে না। আমদানিনির্ভর এলএনজির লোকসান সামাল দিতে সরকার বাণিজ্যিক, শিল্প ও বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়াতে চাচ্ছে।

দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ : গতকাল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিকালে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতারা এ দাবি জানান। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম। সমাবেশে বক্তারা বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা বলে বিইআরসি গণশুনানিতে জনস্বার্থ লঙ্ঘন করে দুর্নীতিবাজ প্রতিষ্ঠান, কিছু ব্যক্তি এবং সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে।

এজন্য বক্তারা ১১ মার্চকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ আখ্যা দিয়ে গ্যাসের দাম কমানো, প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করতে গণশুনানি আয়োজনের দাবি জানান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর