জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ‘খন্ডিত ও বিকৃত বয়ানের মধ্য দিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে বাঙালির ইতিহাসের তাৎপর্যপূর্ণ মার্চ মাস। এ মাসেই বাঙালির স্বাধিকার সংগ্রাম স্বাধীনতার চেতনা লাভ করে, যার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে নিউক্লিয়াসের উদ্যোগে ১ মার্চ স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ২ মার্চ স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন ও ৩ মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠের মতো ঘটনা ঘটে। এরপর আসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ।’ এ নিয়ে যৌথ বিবৃতি দেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন। গতকাল বিকালে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আনসার উদ্দিন স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেউ কেউ ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। এ ষড়যন্ত্র কারা করেছে তা প্রধানমন্ত্রী ভালো বলতে পারবেন। তবে প্রকৃত ইতিহাস হলো, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’- এ বাক্য দুটি সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস ও বিএলএফের অগ্রণী ভূমিকা ছিল। পূর্ণ ভাষণটিও নিউক্লিয়াস, বিএলএফ ও পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড বারবার দেখেছেন। পর্যালোচনা করেছেন। উন্নত করার চেষ্টা করেছেন। বিবৃতিতে দুই নেতা আরও বলেন, ‘পত্রিকার লেখা, টেলিভিশনের প্রচার বা সরকারি কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্যে এ সত্য বেরিয়ে আসেনি। কেউ উদ্ধৃত করেননি যে, বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়ার পর নিউক্লিয়াস, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও বিএলএফ দেশে বিকল্প একটি গণপ্রশাসন গড়ে তুলেছিল। এই প্রশাসন পরিচালিত হয় ছাত্র ব্রিগেড, যুব ব্রিগেড, শ্রমিক ব্রিগেড ও কর্মচারী ব্রিগেডের দ্বারা। তারা লঞ্চ, স্টিমার থেকে শুরু করে ল্যান্ড ট্রাফিক, এয়ারপোর্ট, রেলওয়ে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেছেন। রক্ষা করেছেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। স্বাধীনতার পর ১৬ দিন মুক্তিবাহিনীর প্রশাসন অব্যাহত থাকা অবস্থায় দেশে যেমন কোনো চুরি-ডাকাতি, অন্যায়-অনাচার হয়নি, তেমনি মার্চে সেই ব্রিগেড দ্বারা যখন সবকিছু পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ হয়েছে তখনো দেশে কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়নি। এসব ঘটনা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় স্বাধীন দেশে জনগণের অংশীদারিত্বমূলক রাষ্ট্র-প্রশাসন কেমন হওয়া উচিত। এই শিক্ষাকে জনমনে দৃঢ় করার স্বার্থেই মার্চের প্রকৃত ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস জনসম্মুখে তুলে ধরা উচিত।’