শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
♦ চট্টগ্রাম ♦ রাজশাহী

তীব্র হচ্ছে পানি সংকট

ওয়াসা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করে। কিন্তু এখন দৈনিক ৪২ থেকে ৪৩ কোটি লিটার পানি উৎপাদন হচ্ছে

প্রতিদিন ডেস্ক

তীব্র হচ্ছে পানি সংকট

তীব্র হচ্ছে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে পানির সংকট। এ ছাড়া আশপাশের জেলাগুলোতেও হতে পারে পানির সংকট। কাপ্তাই হ্রদে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির মাত্রা কমেছে। রাজশাহী জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোয় পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম জানান, কাপ্তাই হ্রদে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির মাত্রা কমেছে। ফলে এর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি উৎপাদনে। ওয়াসার পানি কম উৎপাদন হওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে সরবরাহে। এই তীব্র দাবদাহে পানির সংকটে পড়তে হচ্ছে ওয়াসার গ্রাহকদের।

জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে পানি পরিমাপের হিসাব রাখার রুলকার্ভ অনুযায়ী পানি থাকার কথা ৮৫ মিটার এমএসএল। কিন্তু এখন গরমে পানি কমে পাওয়া যাচ্ছে ৭৭ মিটার এমএসএল। বৃষ্টি না হওয়ায় হ্রদে পানি কমে গেছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, সাধারণত ওয়াসা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করে। কিন্তু এখন দৈনিক ৭ থেকে ৮ কোটি লিটার পানি কম উৎপাদন করতে পারছে। জানা যায়, ওয়াসা চারটি শোধনাগারের মাধ্যমে পানি উৎপাদন করে। এর মধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-১ ও ২ প্রকল্প থেকে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার করে মোট ২৮ কোটি লিটার। মোহরা পানি শোধনাগার ও মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি শোধনাগারে উৎপাদন হয় ৯ কোটি লিটার করে মোট ১৮ কোটি লিটার। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানি কমে যাওয়া ও সমুদ্রের জোয়ারের পানি কর্ণফুলী নদীতে ঢুকে পড়ায় মোহরা ও শেখ রাসেল পানি শোধনাগারের প্ল্যান্ট থেকে কম পানি উৎপাদন হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী জানান, রাজশাহী জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোয় পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চলের গ্রামগুলোতে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এ অঞ্চলের কোথাও টিউবওয়েলে এক ফোঁটা পানিও উঠছে না। চলমান তাপপ্রবাহ ও তীব্র খরার মধ্যে পানির স্তর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক নিচে অবস্থান করায় পানি নিয়ে বরেন্দ্র অঞ্চলজুড়ে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিশেষ পোস্ট দিয়েছেন এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি লিখেছেন, ‘বাঘা-চারঘাট এলাকায় পানি পেতে সমস্যা হচ্ছে মানুষের। পানির স্তর দ্রুত নেমে যাওয়ার এটা বড় কারণ বলে মনে হচ্ছে। অতিরিক্ত পুকুর খনন করে গভীর নলকূপ বসিয়ে পুকুরে পানি ভরা হচ্ছে।’ তার পোস্টে কয়েক শ মানুষ মন্তব্য করেছেন। তারাও পানি সংকটের কথা তুলে ধরেছেন। বিভাগীয় জনস্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সংকট মেটাতে গ্রামাঞ্চলে সাবমারসিবল পাম্প বরাদ্দ ও স্থাপন করা হচ্ছে। জানা গেছে, রাজশাহী মহানগর এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনে উচ্চক্ষমতার পানির পাম্প আছে। ব্যক্তি উদ্যোগে ৬ হাজারের বেশি সাবমারসিবল পাম্প আছে। নগরীতে থাকা হস্তচালিত নলকূপগুলো থেকে পানি পাচ্ছে না নগরবাসী। অন্যদিকে গ্রাম জনপদে থাকা কোনো হস্তচালিত নলকূপেও পানি উঠছে না। তানোরের মু ুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান জানান, শুষ্ক মৌসুমে বরেন্দ্র এলাকায় পানির সংকট বেশি দেখা যাচ্ছে। জানা গেছে, এপ্রিল-মে মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় বরেন্দ্র অঞ্চলের জনপদে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেমে যাচ্ছে। এ সময়ে বরেন্দ্রভূমির মাঠঘাট, পুকুর, জলাশয় শুকিয়ে গেছে। পানি গবেষণা সংস্থা ওয়ারপোর প্রতিবেদন অনুসারে, রাজশাহীর পাঁচন্দর ইউনিয়ন হলো দেশের সবচেয়ে উত্তপ্ত এলাকা। এলাকার বাসিন্দা সাজেদুল ইসলাম বলেন, পানি সংকটে গরু-বাছুর পালন করা কঠিন হয়ে উঠেছে। রাজশাহীর জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, প্রতি বছর এপ্রিল-মে মাসে বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর নেমে যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর