সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউর কারণে চার দিন স্থবির থাকার পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বন্দরের কার্যক্রম। কাস্টমসেও বিকল্প ব্যবস্থায় আমদানি-রপ্তানি নতুন চালান শুল্কায়নের মাধ্যমে পণ্য খালাস ও রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সড়কের পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় গতকাল থেকে খালাস পণ্য নির্ধারিত স্থানগুলোতে নিতে শুরু করেছেন আমদানিকারকরা। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
চট্টগ্রাম : রবিবার ও সোমবার বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারি না হওয়ায় জাহাজ থেকে আসা কনটেইনার ওঠা-নামা এবং স্থানান্তরে দেখা দেয় জট। তবে বহির্নোঙরে মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাস ও লাইটারিং ছিল স্বাভাবিক। গতকাল ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ার পর শুরু হয় বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারির স্বাভাবিক কার্যক্রম। এর ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম কাস্টমসেও শুরু হয় কার্যক্রম। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ইন্টারনেট চালু হওয়ায় বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমও চালু হয়েছে। কাস্টমস থেকে শুল্কায়ন করা পণ্যগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। কাস্টমসের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। বর্তমানে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
খুলনা : দেশের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় গতকাল থেকে খালাসকরা পণ্য নির্ধারিত স্থানগুলোতে নিতে শুরু করেছেন আমদানিকারকরা।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান জানান, গত পাঁচ দিনে বিদেশ থেকে মোংলা বন্দরে ১৩টি জাহাজে করে প্রায় ৯৪ হাজার মেট্রিক টন ক্লিংকার, খাদ্যশস্য, পাথর বন্দরে খালাস হয়। কিন্তু সড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চলাচল না করার তা নির্ধারিত স্থানে নিতে পারেনি আমদানিকারকরা। আজ (বুধবার) থেকে এসব পণ্য সড়কপথে নিজ গন্তব্যে নেওয়া শুরু হয়। একই সঙ্গে নৌপথেও খালাস পণ্য নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত পাঁচ দিনে যেসব জাহাজ ক্লিংকার ও খাদ্যশস্য নিয়ে বন্দরে এসেছিল তা কনটেইনারবাহী ছিল না। ফলে সেগুলো কোনো পণ্য না নিয়ে ফিরে গেলেও রপ্তানি কার্যক্রমে প্রভাব ফেলেনি।
পটুয়াখালী : সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পায়রা বন্দরে গতকাল সকাল ১১টা থেকে পায়রা বন্দরের দাপ্তরিক সব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য টহল দিচ্ছে নৌবাহিনীর ৩০ সদস্যের একটি দল।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জুলাই থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত পায়রা বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লাবাহী ৪টি মাদার ভেসেল। এর মধ্যে ১৫ জুলাই ওয়ান ব্রাইট ২৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা, ১৯ জুলাই সি স্প্রিট ২৪ হাজার মেট্রিক টন ও সর্বশেষ ২০ জুলাই এম ভি আবদুল্লাহ ২৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে নোঙর করেছে বন্দরের জেটিতে। পর্যায়ক্রমে এসব জাহাজ থেকে কয়লা খালাস করা হয় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। সর্বশেষ গতকাল এমভি আবদুল্লাহ মাদার ভেসেল কয়লা খালাস করে বন্দর ছেড়ে গন্তব্যে চলে গেছে। এ ছাড়াও মোট ৩১টি লাইটার জাহাজে বিভিন্ন পণ্য হ্যান্ডেলিং করা হয়েছে। মোট ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আসছে বন্দরে। এর মধ্যে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ লাখ টন কয়লা রয়েছে।
পায়রা বন্দরের উপপরিচালক ট্রাফিক আজিজুর রহমান জানান, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পটুয়াখালীতে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। ইতোমধ্যেই ৪টি জাহাজের কয়লা খালাস করেছি। পটুয়াখালীতে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে মাদার ভেসেল এসেছে পায়রা বন্দরে। জাহাজ ৪টি কয়লা খালাস করে আবার ফিরে গেছে।