১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৬৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের পরিবারের সাতজনসহ আটজনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত।
মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ছাড়াও মামলায় তার স্ত্রী ফজলুতুননেসা, দুই মেয়ে ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া ও তাসনিয়া কামরুন অনিকা, ছেলে মোস্তফা কামরুস সোবহান ও ছেলের স্ত্রী শাফিয়া সোবহানকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া কুদ্দুসের আত্মীয় নূর-ই-হাফজা এবং মেয়ে ফৌজিয়া কামরুন তানিয়ার স্বামী মীর রাশেদ বিন আমানকেও আসামি করা হয়েছে। মীর রাশেদ প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সিএফও ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা। দুদকসূত্র জানান, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর জন্য ২০১৮ সালে উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা দরে ১ কোটি ৫ লাখ প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানির পরিচালক ও প্রথম চেয়ারম্যান আসামি নূর-ই-হাফজা, পরিচালক ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালক শাফিয়া সোবহান চৌধুরী ও শেখ মোহাম্মদ ডানিয়েলের (মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জামাতা) কাছ থেকে কোনো টাকা না নিয়েই তাদের নামে মোট ৯ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ইস্যু করা হয়। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জামাতা মীর রাশেদ বিন আমানকে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস চেয়ারম্যান থাকাকালে তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে প্রদান বাবদ ১৪১ কোটি ৫৬ লাখ ৯০ হাজার ৫০০, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস নিজে ও পরিবারের সদস্যদের নামে বেতন হিসেবে ২ কোটি ২৪ লাখ, কোম্পানির টাকায় নিজেদের জন্য শেয়ার ইস্যু বাবদ ৯ কোটি ১৬ লাখ ৫০, ইআরপি মেইনটেন্যান্স বাবদ ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৬৮ হাজার ৮১৭, বিলাসবহুল গাড়ি কেনা বাবদ ১ কোটি ৭০ লাখ, পরিবারের সদস্যদের অতিরিক্ত লভ্যাংশ প্রদান বাবদ ১ কোটি ৬০ লাখ ১০ হাজার ৭৫০, বিদেশে নিজের চিকিৎসা, সন্তানের শিক্ষা, ভ্রমণব্যয় বাবদ ১ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ৮০০, গ্রুপ বিমা পলিসি থেকে কমিশন বাবদ ১৯ লাখ, আইপিও খরচের নামে ব্যয় বাবদ ৮ কোটি ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫৯, অফিস ভাড়ার নামে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ড্রাগন আইটিকে প্রদান বাবদ ১১ কোটি ৯৪ লাখ ২০, নিজ মালিকানাধীন পুরো ভবনের ইউটিলিটি বিল পরিশোধ বাবদ ১ কোটি ৭২ লাখ ৪২ হাজার ২২৩, নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ড্রাগন সোয়েটার ও স্পিনিং লিমিটেডের ট্যাক্স পরিশোধ বাবদ ১৩ লাখ ৭৫ হাজারসহ ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৬৬ টাকা আত্মসাৎ করেন।