স্বাভাবিক হচ্ছে চট্টগ্রামের বাণিজ্য। দেশের অর্থনীতির পাইপলাইন খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘণ্টা পুরোদমে চালুর ফলে কনটেইনার জট নেমে এসেছে সহনীয় পর্যায়ে। ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ বাজার খাতুনগঞ্জে পুরোদমে শুরু হয়েছে বেচাকেনা।
চট্টগাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘ইন্টারনেট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা হয় কনটেইনার হ্যান্ডলিং। বর্তমানে ইয়ার্ডে কনটেইনারের সংখ্যা সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে। আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যে ইয়ার্ডে কনটেইনারের সংখ্যা আরও কমে আসবে।’
বিজিএমইএ’র প্রথম সহসভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রামে চালু হয়েছে সব পোশাক কারখানা। বর্তমানে শতভাগ কারখানা চালু রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি ক্ষতি পুষিয়ে নিতে।’ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলন ও কারফিউর কারণে গত সপ্তাহের পাঁচ দিন খাতুনগঞ্জ ছিল স্থবির। ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল শূন্য। ব্যাংক লেনদেন শুরু হওয়ায় এবং কারফিউ শিথিল করায় ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন। শনিবার থেকে পুরোদমে বেচাকেনা হচ্ছে।’
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার জট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে ধীরে ধীরে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে টানা পাঁচ দিন কনটেইনার হ্যান্ডলিং ব্যাঘাত হওয়ায় ইয়ার্ডে জমে যায় কনটেইনার। ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস ক্ষমতাসম্পন্ন ইয়ার্ডে জমে যায় ৪২ হাজারের অধিক কনটেইনার। কিন্তু ইন্টারনেট এবং আন্দোলন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর বন্দর চালু রাখা হয় ২৪ ঘণ্টা।
দিনরাত চালু থাকার ফলে ইয়ার্ডে কনটেইনারের সংখ্যা চলে এসেছে সহনীয় পর্যায়ে। তবে বহির্নোঙরে বেড়েছে জাহাজের অপেক্ষার সময়। গতকাল পর্যন্ত কোনো কোনো জাহাজকে তিন থেকে চার দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে জেটিতে ভেড়ার জন্য। বর্তমানে ১১টির মতো জাহাজ অপেক্ষায় রয়েছে কনটেইনার খালাসের। আন্দোলনের প্রভাবে বন্ধ থাকার পর ২৩ জুলাই বিকল্প ব্যবস্থায় কাস্টম হাউস শুল্কায়ন শুরু করে। ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ার ফলে পুরোদমে শুরু হয়েছে কাস্টমসের কার্যক্রম। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে এসেছে গতি। টানা আন্দোলনের প্রভাব পড়ে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জেও। কারফিউ, ব্যাংক লেনদেন বন্ধ এবং ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন থাকার ফলে ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ এ বাজার। স্বাভাবিক সময়ে এ বাজারে প্রতিদিন কয়েক শ পণ্যবাহী গাড়ি প্রবেশ করলেও আন্দোলনের সময় তা নেমে আসে শূন্যের কোঠায়। বুধবার ব্যাংক লেনদেন শুরু হওয়ায় ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন বাজারে। শনিবার পুরোদমে শুরু হয় বেচাকেনা। আন্দোলন এবং কারফিউর কারণে বন্ধ ছিল চট্টগ্রামের ৬ শতাধিক কারখানা। পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর পুরোদমে চালু হয় সব কারখানা। বর্তমানে শিডিউল অনুযায়ী ক্রেতাদের অর্ডার ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে।