উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ঘাঘটসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। শঙ্কা দেখা দিয়েছে বন্যার। মুহুরী ও কহুয়া নদীর চার স্থানে বাঁধ ভেঙে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। খাগড়াছড়িতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর পানি বেড়ে সহস্রাধিক পরিবারের বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। জেলার বাস টার্মিনালটি এখন পানির নিচে। বান্দরবান শহরের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিপৎসীমায় রয়েছে সাঙ্গু নদীর পানি। সাতক্ষীরায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। বাগেরহাটে ভারী বর্ষণে সড়ক-বাড়িঘরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মোংলায় পাঁচ জাহাজে গম-সার খালাস বন্ধ রয়েছে। পটুয়াখালীতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে আমনের বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কলাপাড়ায় তলিয়ে গেছে মাছের ঘের, পুকুর। লক্ষ্মীপুরে ভারী বর্ষণে ভেসে গেছে শতাধিক ঘের ও পুকুরের মাছ। বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি।
রংপুর : দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে বলে জানিয়েছে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ঘাঘট, যমুনাশ্বরী, আপার করতোয়া, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, ইছামতী-যমুনা এবং আপার আত্রাই নদীর পানি বাড়তে পারে।
ফেনী : পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থানে ভেঙে অন্তত পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। স্থানীরা জানান, টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহুরী ও কহুয়া নদীর শালধর টেটেস্বর, পশ্চিম মীর্জানগর ও বেড়াবাড়িয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।
খাগড়াছড়ি : ভারী বর্ষণে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সহস্রাধিক পরিবারের বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। সদরের মুসলিমপাড়া, মেহেদীবাগ, কালাডেবা, গঞ্জপাড়া, ঠাকুরছড়া, শব্দমিয়া পাড়া, শান্তিনগর, পুরাতন জিপ স্টেশন এলাকা ও দীঘিনালা মেরুং এলাকার বেশকটি গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। জেলার বাস টার্মিনাল এবং ফায়ার সার্ভিস অফিসটি পানির নিচে ডুবে আছে।
বান্দরবান : জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাঙ্গু নদীর পানি বেড়ে শহরের ইসলামপুর এলাকাসহ কয়েকটি এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে লোকজন।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সাতক্ষীরা পৌরসভার রাজারবাগান, মাছখোলা, কামাননগর, রাধানগর, সাতক্ষীরা বাইপাস এলাকা, মধুমল্লারডাঙ্গি, রসুলপুরের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। ভেসে গেছে মৎস্য ঘের, পুকুর।
বাগেরহাট : ডুবে গেছে বাগেরহাট শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বাড়িঘরসহ নিম্নাঞ্চল। দুই দিন ধরে মোংলা বন্দরের দুটি গম ও তিনটি সারসহ পাঁচটি জাহাজে পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ রয়েছে। বাগেরহাট শহরে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণের ফলে রাস্তার ওপর জমে থাকা পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। উল্টো ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা সড়কে ভেসে বেড়াচ্ছে। বাগেরহাট সদর, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলা উপজেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পটুয়াখালী : উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে অবস্থান করছে। আড়তঘাটে নোঙর করা রয়েছে ট্রলার। টানা বৃষ্টিতে চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আমনের বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাঘাট, বাড়িঘর এখন পানির নিচে। ভেসে গেছে শতাধিক ঘের ও পুকুরের মাছ। আমনের বীজতলাও নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।