সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিদেশে যাওয়ার বিষয়টিকে গুজব বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি দেশে আছি, পালাইনি। চলমান সহিংস পরিস্থিতি দু-এক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হবে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী। গতকাল সচিবালয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো গুজব নিয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, আমি আমার উপস্থিতি বোঝাতে চেষ্টা করেছিলাম যে, আমি দেশেই আছি। এমনকি এখন আমার বিদেশ থাকার কথাই ছিল; যা আমি গত ৩১ জুলাই বাতিল করেছি। যদি আমি বিদেশ যেতাম তাহলে আজ দেশে ফেরার কথা ছিল। মন্ত্রী বলেন, আমি সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা বলেছে, ভুয়া একটা কাগজ ছেড়েছে।
এটা আমিও পেয়েছি। আমার এক আত্মীয় পাঠিয়েছেন। এটা একটু পরিষ্কার করা দরকার ছিল। আমি তো দেশেই আছি। আমি শনিবার পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছিলাম। সেখান থেকে ঢাকায় ফিরেছি। যথারীতি অফিস করছি। এটাই জানালাম যে, আমি দেশে আছি, পালাইনি। পালানোর কোনো প্রশ্নও নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যদিও আমার চেকআপ করাটা খুব জরুরি ছিল। ২০১৯ সালে আমার বাইপাস হয়েছে। চেকআপের জন্য যাওয়ার কথা ছিল, আমি বলছি দেশের এ পরিস্থিতিতে যাব না। উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী আরও বলেন, দেশে থেকেই রাজনৈতিকভাবে আমার যা করণীয় করব। যেহেতু অস্থির একটা রাজনৈতিক সময় যাচ্ছে, সে জন্য আমি এ কথাটা বললাম। গৃহায়ণ মন্ত্রী বলেন, আন্দোলন এখন আর ছাত্র আন্দোলনে নেই, সেটা স্পষ্ট। বর্তমান সহিংস পরিস্থিতি কাম্য নয়। সোমবারের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দলের ব্যর্থতা ছিল কি না - জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিস্থিতির জন্য দলের ব্যর্থতা আছে কি না তা বলতে পারব না। তবে আমার এলাকার কথা বলতে গেলে বলব, ব্যর্থতা তো কিছু ছিলই। শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা এবং নিজ এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এটা কেমন শান্তিপূর্ণ? তারা সশস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। আগে যে নিহতের ঘটনা ঘটেছে সেখানে আমরা বলেছি তৃতীয় পক্ষ ঢুকেছিল। কিন্তু আজকের (রবিবার) যে কর্মসূচি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দিয়েছে এতে যে ঘটনা ঘটছে এর দায় তো তাদেরই নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, তারা এতদিন রাজনৈতিক কথা বলেনি, এখন বলছে। তাদের কোনো অথরিটি নেই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলনের ডাকের উদাহরণ টেনে পূর্তমন্ত্রী বলেন, তখন বঙ্গবন্ধুর ডাকে খাজনা, ট্যাক্স, অফিস করা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার শিক্ষার্থীরা যে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিল তার অথরিটি কী? ট্যাক্স, খাজনা বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার অধিকার কি তাদের আছে?
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যে দাবি তুলেছেন, সব মানা হয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা করবেন না। সব সমস্যার সমাধান আলোচনার টেবিলে হয়। যুদ্ধের অবসানও আলোচনার টেবিলে হয়ে থাকে। উদাহরণ দিয়ে ওবায়দুল মোক্তাদির বলেন, ফিলিস্তিনির সমস্যা সমাধানেও আলোচনা চলছে টেবিলে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, সমস্যা সমাধানে তাদের আলোচনার টেবিলে আসতে হবে। আমি মনে করি, আলোচনা ছাড়া কোনো গতি নেই।
সরকার চাপে আছে কি না - এমন প্রশ্নের জবাবে পূর্তমন্ত্রী বলেন, দায়িত্ব নিয়ে কথা বলব না। তবে এমন পরিস্থিতি বহুবার এসেছে। রাজনীতি মানেই চাপ। চাপে থেকেই কাজ করতে হয়। আওয়ামী লীগকে সবসময় টার্গেট করা হয়েছে। অতীতেও হয়েছে। আমাদের ওপর পাল্টা আক্রমণের নির্দেশ নেই। আমি মনে করি, সবার জন্যই একই রকম নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা রাজনৈতিকভাবেই বিষয়টা মোকাবিলা করব। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পুরোপুরি নষ্ট করেছে তা বলব না। পরিস্থিতি শিগগিরই শান্ত হবে।