বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানদের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো গুলি চালিয়ে হত্যা করবে, এই অবস্থায় আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমরা নিজের জান দেব। আমাদের ওপর গুলি করুক। আমাদের জীবনের শেষ সময়। কিন্তু তাদের (শিক্ষার্থী) আমরা হত্যা করতে দেব না। প্রয়োজনে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে বুক পেতে দেব।’ গতকাল বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকায় নিজ বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সন্তান হিসেবে আপনাদের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম। রাজশাহীবাসীকে আমরা অনুরোধ করব, ছাত্রসমাজের অসহযোগ আন্দোলন, এটা আজকে জাতির মুক্তির আন্দোলন।
এই অসহযোগ আন্দোলনে তারা যা যা অনুরোধ করেছে তার সবকিছু মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি। অভিভাবকরা মা হিসেবে, কেউ বাবা হিসেবে পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিএনপির উপদেষ্টা হিসেবে আমার নৈতিক সমর্থন আছে। আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলে দিয়েছেন সব নেতা-কর্মীকে এই আন্দোলনকারীদের পাশে থেকে সহযোগিতা করতে। সবাই আমরা সবকিছুতে পাশে থাকব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘হামলা কেন করবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে। অনেক সময় পরিস্থিতির কারণে অনেকে কিছু হয়তো ভুল করে বসে। আমি তাদের মুরব্বি হিসেবে বলব - জ্বালাও-পোড়াওয়ের পথে কেউ যেন না যায়। আন্দোলনের সময় আশপাশে অনেক লোকজন ঢুকে যায়। আমি তো অনেক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে আমরা মূল নেতৃত্বে ছিলাম।’
মিনু বলেন, ‘আমার সন্তান বিদেশে লেখাপড়া করে। তার বন্ধুরা শহীদ হয়ে গেছে। তার রুমমেট ছিল আদনান। কেউ অপরাধ করলে তার শাস্তি পাবে। তবে আমি আমার ছেলেদের সেই শিক্ষা দিইনি। আমার স্ত্রী সে মা হিসেবে গিয়েছিল আন্দোলনে।’ তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজশাহী নগরীতে ১৬টি মামলায় তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। দিনরাত বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে সাদা পোশাকে পুলিশ হানা দিচ্ছে। নেতা-কর্মীদের না পেয়ে পরিবারের সদস্য এমনকি পিতা-মাতা ও ভাই-বোনদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আবুল কাশেম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী মেডিকেলের সাবেক চিকিৎসক ডা. ওয়াসিম হোসেন প্রমুখ।